খেলা
প্রথম রাউন্ডে চমক ভারতীয়দের
স্পোর্টস ডেস্ক
২৫ মার্চ ২০১৮, রবিবার, ১০:০১ পূর্বাহ্ন
ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট সুপার লীগ শুরু
সুপার লীগের প্রথম রাউন্ডের তিন ম্যাচেই চমক দেখালেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। গতকাল ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে উজ্জ্বল নৈপুণ্য দেখান তিন ম্যাচে ৬ দলের ছয় ভারতীয় খেলোয়াড়। গতকাল দুটি সেঞ্চুরি আসে ভারতীয় খেলোয়াড়দের ব্যাট থেকে। চলতি আসরে প্রথমবার খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি হাঁকান আবাহনীর ভারতীয় ব্যাটসম্যান হনুমান বিহারি ও শেখ জামাল ধানমন্ডির উন্মুক্ত চাঁদ। অর্ধশতক পান খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতির ভারতীয় মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান অশোক মেনারিয়া ও গাজী গ্রুপের অনুস্তুপ মজুমদার। চলতি আসরে সর্বাধিক রানের কৃতিত্বও মেনারিয়ার। গতকাল নিজ নিজ দলের লেজের দিকে ব্যাট হাতে নৈপুণ্য দেখান অলরাউন্ডার পারভেজ রসুল ও ইকবাল আবদুল্লাহ। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন পারভেজ আর খেলাঘরের বিপক্ষে দোলেশ্বরের জয়ে ৭ নম্বরে ব্যাট হাতে ৩৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন ইকবাল আবদুল্লাহ। চলতি ঢাকা লীগে ১২ ম্যাচে সর্বাধিক ৬২৪ রান সংগ্রহ অশোক মেনারিয়ার। নিজের ১২ ইনিংসের ১০টিতে মেনারিয়া দেখালেন ৫০-ঊর্ধ্ব রানের কৃতিত্ব। আসরে দ্বিতীয় সর্বাধিক ৫৮০ রান সংগ্রহ লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের নাইম ইসলামের। ৫৫১ রান নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন একই দলের ওপেনার আবদুল মজিদ।
কক্ষপথেই আবাহনী
জয় দিয়ে সুপার লীগ পর্ব শুরু করলো পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দল আবাহনী লিমিটেড। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের সুপার সিক্স পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ৭৩ রানে জয় দেখেছে তারা। ঘরোয়া লিস্ট ‘এ’ আসর ঢাকা লীগে শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে আবাহনীকে ব্যাটিংয়ে পাঠান গাজী গ্রুপের অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম অমি। আর আসরে নিজের প্রথম ম্যাচেই চমক দেখালেন হনুমান বিহারি। ভারতীয় এ ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিতে ভর করে ইনিংস শেষে আবাহনীর সংগ্রহ পৌঁছে ২৭৮/৬-এ। ১২৪ বলে ১০৯ রান করেন বিহারি। এতে বিহারি হাঁকান ১০টি চার ও একটি ছক্কা। সাত নম্বরে ব্যাট হাতে ৭২ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৬১ বলের ইনিংসে ছয় বাউন্ডারি ও একটি ছক্কা আসে মিঠুনের ব্যাট থেকে। গাজী গ্রুপের বল হাতে দুটি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান ও আবু হায়দার রনি। জবাবে ৭ ওবার বাকি রেখে ২০৫ রানে গুঁড়িয়ে যায় গাজী গ্রুপের ইনিংস। আবাহনীর বল হাতে ১০ ওভারের স্পেলে ৫০ রানে চার উইকেট নেন বাঁ-হাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম। মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ নেন দুটি করে উইকেট। চলতি আসরে ১২ ম্যাচে ৩২ উইকেট নিয়ে সফল বোলারের তালিকায় শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছেন পেস তারকা মাশরাফি। সুপার লীগে উঠতে না পারা মোহামেডানের তরুণ পেসার কাজী অনিকের শিকার ২৮ উইকেট। আর ১২ ম্যাচে ২৩ উইকেট নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছেন ফরহাদ রেজা। আসরে ১২ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে তারকাখচিত দল আবাহনী। ১২ পয়েন্ট নিয়ে ছয় দলের সুপার লীগে তালিকার তলানিতে রয়েছে শিরোপাধারী গাজী গ্রুপ।
দোলেশ্বরের শেষের নায়ক ফরহাদ রেজা
২৫৯ রানের টার্গেটে ৪০তম ওভারে দলীয় ১৭২ রানে ৭ উইকেট খুইয়ে দিশাহারা দেখাচ্ছিল প্রাইম দোলেশ্বরকে। তবে ব্যাটিংক্রমের লেজের দিকে অসাধারণ নৈপুণ্য নিয়ে দলকে দিশা দেখান অধিনায়ক ফরহাদ রেজা। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন লীগে সুপার সিক্স পর্বে গতকাল খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতির বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে তিন উইকেটে জয় কুড়ায় প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। দলের পক্ষে ব্যাটে-বলে চৌকস নৈপুণ্য দেখান ম্যাচসেরা খেলোয়াড় ফরহাদ রেজা। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী মাঠে টস জিতে খেলাঘরকে ব্যাটিংয়ে পাঠান দোলেশ্বর অধিনায়ক। আর তিন অর্ধশতকে ভর করে ২৫৮/৮ সংগ্রহ নিয়ে ইনিংস শেষ করে খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতি। দলের সর্বোচ্চ ৬২ রান আসে ওপেনার রবিউল ইসলাম রবির ব্যাট থেকে। দোলেশ্বরের বল হাতে ১০ ওভারের স্পেলে ৪৫ রানে পাঁচ উইকেট নেন আরাফাত সানি। ১১৫ ম্যাচর লিস্ট ক্যারিয়ারে বাঁ-হাতি স্পিনার সানির এটি চতুর্থবার পাঁচ উইকেট শিকার।
আর চলতি ঢকা লীগে ইনিংসে পাঁচ উইকেটের দশম ঘটনা এটি। তালিকার শীর্ষে গাজী গ্রুপের ইয়াসিন আরাফাতের নাম। প্রথম পর্বে আবাহনীর বিপক্ষে ৪০ রানে ৮ উইকেট নেন ইয়াসিন। গতকাল ৯ ওভারের স্পেলে ৫৬ রানে দুই উইকেট নেন পেসার ফরহাদ রেজা। এতে এবারের সফল বোলারের তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এলেন দোলেশ্বরের এ পেসার। ফতুল্লায় জবাবে দোলেশ্বরের ব্যাটিংক্রমের শীর্ষ ৭ খেলোয়াড় ব্যক্তিগত দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছে খোয়ান একের পর এক উইকেট। ছয় ও সাত নম্বরে ব্যাট হাতে যথাক্রমে ৩০ ও ৩৫ রান করেন শরিফুল্লাহ ও ভারতীয় রিক্রুট ইকবাল আবদুল্লাহ। ৩৮ বলের ইনিংসে ইকবাল হাঁকান দুটি চার ও একটি ছক্কা। তবে ব্যাট হাতে ক্রিজে নেমে ম্যাচের চেহারা বদলে দেন ফরহাদ রেজা। ৩৭ বলে ৬৮ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেন তিনি। এতে রেজা হাঁকান দুটি চার ও সাতটি ছক্কা। আসরে ১২ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর। সমান ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় খেলাঘরের অবস্থান পঞ্চম।
রবি ও চাঁদে আলোকিত শেখ জামাল
এবারের ঢাকা লীগে এটি ছিল উন্মুক্ত চাঁদের প্রথম ম্যাচ। আর ক্যারিয়ারে মাত্র দশম লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন ১৮ বছর বয়সী পেসার রবিউল হক। রবিউল হক ও উন্মুক্ত চাঁদের আলোকিত নৈপুণ্যে জয় দিয়ে সুপার লীগ পর্ব শুরু করলো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। গতকাল ঢাকা লীগে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে ৭ উইকেটের দাপুটে জয় দেখে আসরের শেষ দল হিসেবে সুপার লীগের টিকিট পাওয়া শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। সাভারে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি-৩) মাঠে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের অধিনায়ক নাঈম ইসলাম। দলের শীর্ষ ছয় ব্যাটসম্যানের পাঁচজনই পৌঁছেন ব্যক্তিগত ৪০ রানের কোঠায়। কিন্তু সফল সমাপ্তি দিতে ব্যর্থ হন প্রত্যেকেই। ওপেনার আবদুল মজিদ করেন ১৫ রান। দলের একমাত্র অর্ধশতক আসে নাঈম ইসলামের ব্যাট থেকে। ব্যক্তিগত ৫১ রানে থামে তার ইনিংস। শেখ জামালের বল হাতে ৭ ওভারের স্পেলে ৩৩ রানে পাঁচ উইকেট নেন তরুণ পেসার রবিউল হক। এর আগে বল হাতে তার সেরা নৈপুণ্যটা ছিল ৩/৩৪। চলতি ঢাকা লীগের প্রথম পর্বের শুরুতে ফতুল্লায় প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে এমন নৈপুণ্য দেখান রবিউল হক। গতকাল সাভারে ব্যাট হাতে জবাবে শুরুতে ধাক্কা খায় শেখ জামাল ধানমন্ডি। দলীয় ১১ রানে উইকেট খোয়ান ওপেনার সৈকত আলী। এর পর রূপগঞ্জকে ব্যাটের ধার দেখায় শেখ জামাল ধানমন্ডি। দ্বিতীয় উইকেটে রাকিন আহমেদের সঙ্গে কাঁটায় কাঁটায় ১৫০ রানের জুটি গড়ে ভারতীয় ওপেনার উন্মুক্ত চাঁদ। আর তৃতীয় উইকেটে তানভীর হায়দারের সঙ্গে গড়েন ৬০ রানের জুটি। স্বদেশি স্পিনার পারভেজ রসুলের ডেলিভারিতে উইকেট দেয়ার আগে ১৩৩ বলে ১২৭ রান করেন উন্মুক্ত চাঁদ। এতে তিনি হাঁকান ২০টি বাউন্ডারি। অর্ধশতক পান রাকিন ও তানভীরও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আবাহনী-গাজী গ্রুপ
টস: গাজী গ্রুপ, ফিল্ডিং
আবাহনী: ৫০ ওভার; ২৭৮/৬ (বিহারি ১০৯, মিঠুন ৭২*, সাইফ ৩০, আবু হায়দার ২/৪৫, মেহেদী ২/৪৯)।
গাজী গ্রুপ: ৪৩ ওভার; ২০৫ (অনুস্তুপ ৬৪, মুমিনুল ৪৬, জাকের ২৯*, সানজামুল ৪/৫০, মাশরাফি ২/৩০)।
ফল: আবাহনী ৭৩ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: হনুমান বিহারি (আবাহনী)
দোলেশ্বর-খেলাঘর
টস: দোলেশ্বর, ফিল্ডিং
খেলাঘর: ৫০ ওভার; ২৫৮/৮ (রবি ৬২, মেনারিয়া ৫৪, অমিত ৫০, সানি ৫/৪৫, রেজা ২/৫৬)।
দোলেশ্বর: ৪৮.১ ওভার; ২৫৯/৭ (রেজা ৬৮*, আবদুল্লাহ ৩৫, শরিফুল্লাহ ৩০, সাদ্দাম ৩/৪০, হাসান ২/৫৭)।
ফল: দোলেশ্বর ৩ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: ফরহাদ রেজা (দোলেশ্বর)
রূপগঞ্জ-শেখ জামাল
টস: রূপগঞ্জ, ব্যাটিং
রূপগঞ্জ: ৫০ ওভার; ২৬০/৯ (নাঈম ৫১, তুষার ৪৮*, রসুল ৪৪, রবিউল ৫/৩৩, তাইবুর ২/৪৮)।
শেখ জামাল: ৪৮ ওভার; ২৬২/৩ (উন্মুক্ত ১২৭, তানভির ৬৬, রাকিন ৫২, সৈয়দ রাসেল ২/৫৩)।
ফল: শেখ জামাল ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: উন্মুক্ত চাঁদ (শেখ জামাল)
সুপার লীগের প্রথম রাউন্ডের তিন ম্যাচেই চমক দেখালেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা। গতকাল ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে উজ্জ্বল নৈপুণ্য দেখান তিন ম্যাচে ৬ দলের ছয় ভারতীয় খেলোয়াড়। গতকাল দুটি সেঞ্চুরি আসে ভারতীয় খেলোয়াড়দের ব্যাট থেকে। চলতি আসরে প্রথমবার খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি হাঁকান আবাহনীর ভারতীয় ব্যাটসম্যান হনুমান বিহারি ও শেখ জামাল ধানমন্ডির উন্মুক্ত চাঁদ। অর্ধশতক পান খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতির ভারতীয় মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান অশোক মেনারিয়া ও গাজী গ্রুপের অনুস্তুপ মজুমদার। চলতি আসরে সর্বাধিক রানের কৃতিত্বও মেনারিয়ার। গতকাল নিজ নিজ দলের লেজের দিকে ব্যাট হাতে নৈপুণ্য দেখান অলরাউন্ডার পারভেজ রসুল ও ইকবাল আবদুল্লাহ। শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের বিপক্ষে ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন পারভেজ আর খেলাঘরের বিপক্ষে দোলেশ্বরের জয়ে ৭ নম্বরে ব্যাট হাতে ৩৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন ইকবাল আবদুল্লাহ। চলতি ঢাকা লীগে ১২ ম্যাচে সর্বাধিক ৬২৪ রান সংগ্রহ অশোক মেনারিয়ার। নিজের ১২ ইনিংসের ১০টিতে মেনারিয়া দেখালেন ৫০-ঊর্ধ্ব রানের কৃতিত্ব। আসরে দ্বিতীয় সর্বাধিক ৫৮০ রান সংগ্রহ লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের নাইম ইসলামের। ৫৫১ রান নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছেন একই দলের ওপেনার আবদুল মজিদ।
কক্ষপথেই আবাহনী
জয় দিয়ে সুপার লীগ পর্ব শুরু করলো পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দল আবাহনী লিমিটেড। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের সুপার সিক্স পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ৭৩ রানে জয় দেখেছে তারা। ঘরোয়া লিস্ট ‘এ’ আসর ঢাকা লীগে শনিবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে আবাহনীকে ব্যাটিংয়ে পাঠান গাজী গ্রুপের অধিনায়ক জহুরুল ইসলাম অমি। আর আসরে নিজের প্রথম ম্যাচেই চমক দেখালেন হনুমান বিহারি। ভারতীয় এ ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিতে ভর করে ইনিংস শেষে আবাহনীর সংগ্রহ পৌঁছে ২৭৮/৬-এ। ১২৪ বলে ১০৯ রান করেন বিহারি। এতে বিহারি হাঁকান ১০টি চার ও একটি ছক্কা। সাত নম্বরে ব্যাট হাতে ৭২ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ মিঠুন। ৬১ বলের ইনিংসে ছয় বাউন্ডারি ও একটি ছক্কা আসে মিঠুনের ব্যাট থেকে। গাজী গ্রুপের বল হাতে দুটি করে উইকেট নেন মেহেদী হাসান ও আবু হায়দার রনি। জবাবে ৭ ওবার বাকি রেখে ২০৫ রানে গুঁড়িয়ে যায় গাজী গ্রুপের ইনিংস। আবাহনীর বল হাতে ১০ ওভারের স্পেলে ৫০ রানে চার উইকেট নেন বাঁ-হাতি স্পিনার সানজামুল ইসলাম। মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ নেন দুটি করে উইকেট। চলতি আসরে ১২ ম্যাচে ৩২ উইকেট নিয়ে সফল বোলারের তালিকায় শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছেন পেস তারকা মাশরাফি। সুপার লীগে উঠতে না পারা মোহামেডানের তরুণ পেসার কাজী অনিকের শিকার ২৮ উইকেট। আর ১২ ম্যাচে ২৩ উইকেট নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছেন ফরহাদ রেজা। আসরে ১২ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে তারকাখচিত দল আবাহনী। ১২ পয়েন্ট নিয়ে ছয় দলের সুপার লীগে তালিকার তলানিতে রয়েছে শিরোপাধারী গাজী গ্রুপ।
দোলেশ্বরের শেষের নায়ক ফরহাদ রেজা
২৫৯ রানের টার্গেটে ৪০তম ওভারে দলীয় ১৭২ রানে ৭ উইকেট খুইয়ে দিশাহারা দেখাচ্ছিল প্রাইম দোলেশ্বরকে। তবে ব্যাটিংক্রমের লেজের দিকে অসাধারণ নৈপুণ্য নিয়ে দলকে দিশা দেখান অধিনায়ক ফরহাদ রেজা। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন লীগে সুপার সিক্স পর্বে গতকাল খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতির বিপক্ষে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে তিন উইকেটে জয় কুড়ায় প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। দলের পক্ষে ব্যাটে-বলে চৌকস নৈপুণ্য দেখান ম্যাচসেরা খেলোয়াড় ফরহাদ রেজা। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী মাঠে টস জিতে খেলাঘরকে ব্যাটিংয়ে পাঠান দোলেশ্বর অধিনায়ক। আর তিন অর্ধশতকে ভর করে ২৫৮/৮ সংগ্রহ নিয়ে ইনিংস শেষ করে খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতি। দলের সর্বোচ্চ ৬২ রান আসে ওপেনার রবিউল ইসলাম রবির ব্যাট থেকে। দোলেশ্বরের বল হাতে ১০ ওভারের স্পেলে ৪৫ রানে পাঁচ উইকেট নেন আরাফাত সানি। ১১৫ ম্যাচর লিস্ট ক্যারিয়ারে বাঁ-হাতি স্পিনার সানির এটি চতুর্থবার পাঁচ উইকেট শিকার।
আর চলতি ঢকা লীগে ইনিংসে পাঁচ উইকেটের দশম ঘটনা এটি। তালিকার শীর্ষে গাজী গ্রুপের ইয়াসিন আরাফাতের নাম। প্রথম পর্বে আবাহনীর বিপক্ষে ৪০ রানে ৮ উইকেট নেন ইয়াসিন। গতকাল ৯ ওভারের স্পেলে ৫৬ রানে দুই উইকেট নেন পেসার ফরহাদ রেজা। এতে এবারের সফল বোলারের তালিকায় তৃতীয় স্থানে উঠে এলেন দোলেশ্বরের এ পেসার। ফতুল্লায় জবাবে দোলেশ্বরের ব্যাটিংক্রমের শীর্ষ ৭ খেলোয়াড় ব্যক্তিগত দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছে খোয়ান একের পর এক উইকেট। ছয় ও সাত নম্বরে ব্যাট হাতে যথাক্রমে ৩০ ও ৩৫ রান করেন শরিফুল্লাহ ও ভারতীয় রিক্রুট ইকবাল আবদুল্লাহ। ৩৮ বলের ইনিংসে ইকবাল হাঁকান দুটি চার ও একটি ছক্কা। তবে ব্যাট হাতে ক্রিজে নেমে ম্যাচের চেহারা বদলে দেন ফরহাদ রেজা। ৩৭ বলে ৬৮ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেন তিনি। এতে রেজা হাঁকান দুটি চার ও সাতটি ছক্কা। আসরে ১২ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর। সমান ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় খেলাঘরের অবস্থান পঞ্চম।
রবি ও চাঁদে আলোকিত শেখ জামাল
এবারের ঢাকা লীগে এটি ছিল উন্মুক্ত চাঁদের প্রথম ম্যাচ। আর ক্যারিয়ারে মাত্র দশম লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলতে নেমেছিলেন ১৮ বছর বয়সী পেসার রবিউল হক। রবিউল হক ও উন্মুক্ত চাঁদের আলোকিত নৈপুণ্যে জয় দিয়ে সুপার লীগ পর্ব শুরু করলো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। গতকাল ঢাকা লীগে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে ৭ উইকেটের দাপুটে জয় দেখে আসরের শেষ দল হিসেবে সুপার লীগের টিকিট পাওয়া শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। সাভারে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি-৩) মাঠে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের অধিনায়ক নাঈম ইসলাম। দলের শীর্ষ ছয় ব্যাটসম্যানের পাঁচজনই পৌঁছেন ব্যক্তিগত ৪০ রানের কোঠায়। কিন্তু সফল সমাপ্তি দিতে ব্যর্থ হন প্রত্যেকেই। ওপেনার আবদুল মজিদ করেন ১৫ রান। দলের একমাত্র অর্ধশতক আসে নাঈম ইসলামের ব্যাট থেকে। ব্যক্তিগত ৫১ রানে থামে তার ইনিংস। শেখ জামালের বল হাতে ৭ ওভারের স্পেলে ৩৩ রানে পাঁচ উইকেট নেন তরুণ পেসার রবিউল হক। এর আগে বল হাতে তার সেরা নৈপুণ্যটা ছিল ৩/৩৪। চলতি ঢাকা লীগের প্রথম পর্বের শুরুতে ফতুল্লায় প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে এমন নৈপুণ্য দেখান রবিউল হক। গতকাল সাভারে ব্যাট হাতে জবাবে শুরুতে ধাক্কা খায় শেখ জামাল ধানমন্ডি। দলীয় ১১ রানে উইকেট খোয়ান ওপেনার সৈকত আলী। এর পর রূপগঞ্জকে ব্যাটের ধার দেখায় শেখ জামাল ধানমন্ডি। দ্বিতীয় উইকেটে রাকিন আহমেদের সঙ্গে কাঁটায় কাঁটায় ১৫০ রানের জুটি গড়ে ভারতীয় ওপেনার উন্মুক্ত চাঁদ। আর তৃতীয় উইকেটে তানভীর হায়দারের সঙ্গে গড়েন ৬০ রানের জুটি। স্বদেশি স্পিনার পারভেজ রসুলের ডেলিভারিতে উইকেট দেয়ার আগে ১৩৩ বলে ১২৭ রান করেন উন্মুক্ত চাঁদ। এতে তিনি হাঁকান ২০টি বাউন্ডারি। অর্ধশতক পান রাকিন ও তানভীরও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আবাহনী-গাজী গ্রুপ
টস: গাজী গ্রুপ, ফিল্ডিং
আবাহনী: ৫০ ওভার; ২৭৮/৬ (বিহারি ১০৯, মিঠুন ৭২*, সাইফ ৩০, আবু হায়দার ২/৪৫, মেহেদী ২/৪৯)।
গাজী গ্রুপ: ৪৩ ওভার; ২০৫ (অনুস্তুপ ৬৪, মুমিনুল ৪৬, জাকের ২৯*, সানজামুল ৪/৫০, মাশরাফি ২/৩০)।
ফল: আবাহনী ৭৩ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা: হনুমান বিহারি (আবাহনী)
দোলেশ্বর-খেলাঘর
টস: দোলেশ্বর, ফিল্ডিং
খেলাঘর: ৫০ ওভার; ২৫৮/৮ (রবি ৬২, মেনারিয়া ৫৪, অমিত ৫০, সানি ৫/৪৫, রেজা ২/৫৬)।
দোলেশ্বর: ৪৮.১ ওভার; ২৫৯/৭ (রেজা ৬৮*, আবদুল্লাহ ৩৫, শরিফুল্লাহ ৩০, সাদ্দাম ৩/৪০, হাসান ২/৫৭)।
ফল: দোলেশ্বর ৩ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: ফরহাদ রেজা (দোলেশ্বর)
রূপগঞ্জ-শেখ জামাল
টস: রূপগঞ্জ, ব্যাটিং
রূপগঞ্জ: ৫০ ওভার; ২৬০/৯ (নাঈম ৫১, তুষার ৪৮*, রসুল ৪৪, রবিউল ৫/৩৩, তাইবুর ২/৪৮)।
শেখ জামাল: ৪৮ ওভার; ২৬২/৩ (উন্মুক্ত ১২৭, তানভির ৬৬, রাকিন ৫২, সৈয়দ রাসেল ২/৫৩)।
ফল: শেখ জামাল ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: উন্মুক্ত চাঁদ (শেখ জামাল)