বিশ্বজমিন

মিসরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল

সিসির জয় যেন নিশ্চিত

মানবজমিন ডেস্ক

২৫ মার্চ ২০১৮, রবিবার, ৮:৫৪ পূর্বাহ্ন

আগামী সোমবার মিশরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পরবর্তী দু’দিনসহ মোট তিন দিন মিশরীয়রা নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন। তবে এই নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসির বিজয় যেন অনেকটাই নিশ্চিত। কেননা, তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মুসা মোস্তফা মুসা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করবেন এমন সম্ভাবনা খুবই কম। নির্বাচন যেন একতরফা না হয়, এজন্য তড়িঘড়ি করে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেন মোস্তফা মুসা। এছাড়া দেশে রাজনীতিবিদ হিসেবে তার পরিচিতিও কম। বার্তা সংস্থা এএফপি’র এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
মিশরের ন্যাশনাল ইলেক্টোরাল অথরিটি জানিয়েছে, এবারের নির্বাচনে মোট দু’জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তারা হলেন- বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি ও এল ঘাদ পার্টির নেতা মুসা মুস্তফা মুসা। এছাড়া আরো কয়েকজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আবেদন করলেও সরকারের চাপের মুখে তা প্রত্যাহার করে নেয়। এসব প্রার্থীর অভিযোগ, তাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে সরকার। পদত্যাগ প্রত্যাহার করে নেয়া প্রার্থীদের মধ্যে সাবেক এক প্রধানমন্ত্রী ও সেনাপ্রধানও রয়েছেন। এদিকে, সোমবারের নির্বাচন বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছেন মিশরের প্রধান প্রধান বিরোধীদলীয় নেতারা। সাবেক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হামদিন সাব্বাহি নির্বাচনের সময়ে ‘গৃহে অবস্থান’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। অনুসারীদেরও ভোটদানে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোস্তফা কামাল আল সাইদ বলেন, মোস্তফা মুসার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই সামান্য। নির্বাচনে ভালো প্রচারণা চালাননি তিনি। এমনকি তিনি যে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, অনেক মানুষ এটাও জানে না।
অন্যদিকে সিসির ছবি ও বাণী সংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুনের বন্যায় ভাসছে কায়রোসহ মিশরের প্রধান প্রধান শহরগুলো। বেশির ভাগ পোস্টারে প্রেসিডেন্ট সিসির গুণকীর্তন করা হয়েছে। এতে সাম্প্রতিক কয়েক বছরে মিশরের স্থিতিশীল পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সিসির প্রশংসা করা হয়েছে। ব্যানার ও ফেস্টুন ছাড়াও টেলিভিশন ও সংবাদপত্রগুলোতে প্রায়ই শিরোনাম হন সিসি। এগুলোতে গত চার বছরে নির্মিত বিভিন্ন কারখানা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা প্রচার করা হয়।
চলতি সপ্তাহে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট সিসি বলেন, নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীর অনুপস্থিতির বিষয়ে তার কিছু করার নেই। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আমাদের এক, দুই, তিন বা দশ জন ভালো প্রার্থী থাকবে। তাদের মধ্য থেকে আপনারা নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিকে নির্বাচিত করবেন।’
২০১৪ সালের নির্বাচনে মিশরের প্রতিষ্ঠিত বামপন্থি রাজনীতিবিদ হামদিন সাব্বাহিকে পরাজিত করেন প্রেসিডেন্ট সিসি। সে নির্বাচনে তিনি ৯৬.৯ শতাংশ ভোটারের সমর্থন লাভ করেন। তখন মোট ৩৭ শতাংশ ভোটার নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। তবে এবারের নির্বাচনে ৩৭ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতি অসম্ভবই মনে হচ্ছে। প্রফেসর সাইদ বলেন, নির্বাচনের আগেই মানুষ ফল বুঝতে পেরেছে। এই বিষয়টি মিশরীয়দেরকে ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার প্রতি অনুৎসাহিত করবে। এছাড়া এবারের নির্বাচনে কার্যত কোনো প্রচারণাও চালানো হচ্ছে না। প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে কোনো সুষ্ঠু সংযোগ ঘটছে না। ফলে মিশরের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রার্থীদের পরিকল্পনার বিষয়ে জনগণ কিছু জানতে পারছে না।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা ঢেলে সাজান প্রেসিডেন্ট সিসি। পূর্বে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা হাই ইলেকশন কমিটিকে (এইচইসি) পরিবর্তন করে ন্যাশনাল ইলেকশন অথরিটি (এনইএ) প্রতিষ্ঠা করেন। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল কর্তৃক নির্ধারিত ১০ সদস্যকে এনইএ পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status