দেশ বিদেশ

কেসিসি নির্বাচনের প্রাক প্রস্তুতি শুরু

আওয়ামী লীগ-বিএনপি এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে

২৩ মার্চ ২০১৮, শুক্রবার, ৯:৫৪ পূর্বাহ্ন

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনের প্রাক প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার কমিশনের যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান এক চিঠিতে ভোট কেন্দ্র স্থাপনের জন্য প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা নির্বাচন এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের (প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার) প্যানেল প্রস্তুত করতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়েছেন। খুলনা জেলা নির্বাচন অফিস গত মঙ্গলবার থেকেই এই কাজ শুরু করেছে। গতকাল থেকে তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সরকারি কর্মকর্তাদের তালিকা সংগ্রহ এবং আজ বৃহস্পতিবার থেকে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের কাজ শুরু করবেন। তবে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এখন পর্যন্ত মেয়র পদে তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি। দুই দলেরই একাধিক প্রার্থী স্ব স্ব দলের হাইকমান্ডে লবিং গ্রুপিং চালাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশন থেকে জানা গেছে, আগামী ৩১শে মার্চ কেসিসি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। তফসিল ঘোষণার ৫০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে চাইছে কমিশন। অর্থাৎ রমজানের আগেই নির্বাচন শেষ করতে চাইছে ইসি। তবে সবকিছু নির্ভর করছে ৩১শে মার্চ অনুষ্ঠিত ইসির বিশেষ সভার ওপর। তবে তফসিল ঘোষণার আগেই ভোটের সবরকম প্রস্তুতি শেষ করতে চাইছে তারা। এজন্য তফসিলের তারিখ নির্ধারণের এক সপ্তাহ আগেই খুলনা সিটির ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। কিন্তু সেই তালিকায় কিছু ভুল ধরা পড়ায় তা সংশোধন করতে দেয়া হয়েছে। আগামী সপ্তাহে চূড়ান্ত ভোটার তালিকার সিডি হাতে পাওয়া যাবে।
খুলনা জেলা নির্বাচন অফিস থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৫ জুনের নির্বাচনে কেসিসিতে ভোটার ছিল চার লাখ ৪০ হাজার ৫৬৬ জন। ভোট কেন্দ্র ছিল ২৮৮টি এবং ভোট কক্ষ ছিল এক হাজার ৪২৮টি। এবার ভোটার প্রায় ৪০ হাজারের মতো বাড়ছে। ভোট কেন্দ্রও কয়েকটি বাড়বে। ভোট কক্ষের সংখ্যা বাড়বে শতাধিক। আগামী ৩১শে মার্চের মধ্যেই এগুলো চূড়ান্ত করা হবে।
এদিকে নির্বাচনের ডামাডোল বাজতে শুরু করায় প্রার্থী নিয়ে মানুষের কৌতূহল বাড়ছে। বিশেষ করে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মেয়র প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নেই। ইতিমধ্যে ইসলামী আন্দোলন, জাতীয় পার্টিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করলেও আওয়ামী লীগ তাকিয়ে আছে দলের প্রধানের দিকে। অন্যদিকে দলের চেয়ারপারসনকে কারারুদ্ধ রেখে নির্বাচনে যাওয়া ঠিক হবে-কিনা এ নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে বিএনপি।
আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলীয় ফোরামে এখনো প্রার্থী নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা হয়নি। নেতাকর্মীদের একটি বড় অংশ সাবেক সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক এমপিকে মেয়র প্রার্থী হিসেবে চাইছেন। কিন্তু তিনি প্রার্থী হতে অনীহা প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে খুলনা সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম বছর দুয়েক আগে থেকেই দলের মেয়র প্রার্থী হবেন- এমন প্রত্যাশা থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের দৌলতপুর থানার সভাপতি মোহাম্মদ সৈয়দ আলী, সোনাডাঙ্গা থানার সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাসহ বেশ কয়েকজন। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পরিচ্ছন্ন ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য শেখ সালাউদ্দিন জুয়েলের নামও প্রস্তাব করেছেন কয়েকজন নেতা। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর।
এদিকে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান এবারও প্রার্থী হতে চাইছেন। এতোদিন মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম ও তাকে সমর্থন দিয়েছেন। অন্যদিকে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর শফিকুল আলম মনাও গত ৬ মাস ধরে মেয়র পদে প্রার্থী হতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি বিগত নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। তবে, দলের চেয়ারপারসনের নির্দেশে তা প্রত্যাহার করে নেন। এ নিয়ে বিএনপির মধ্যে নানা দল, উপ-দল তৈরি হয়েছে। কিন্তু বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হওয়া এবং জামিন বিলম্বিত হওয়ায় নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বিএনপি। বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন দিয়ে সরকার জনগণের দৃষ্টি ঘোরাতে চাইছে। খালেদা জিয়াকে জেলে রেখে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। গতকাল পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্ত এটাই। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হলে সেটা পরে জানানো হবে। খুলনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ইউনুস আলী জানান, কমিশনের নির্দেশ হাতে পেয়েই মঙ্গলবার থেকেই আমরা কাজ শুরু করেছি। ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্যানেল তৈরির জন্য নির্বাচনী এলাকার সরকারি স্কুল-কলেজ, সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তালিকা সংগ্রহ করেছি। গতকাল এসব প্রতিষ্ঠান প্রধানদের চিঠি দিয়ে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তালিকা জমা দিতে চিঠি দেয়া হয়েছে। এরপর তালিকা সংগ্রহ, যাচাই-বাছাই করে কমিশনে জমা দেয়া হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status