দেশ বিদেশ

নেপাল ট্র্যাজেডি

৩ বাংলাদেশির লাশ শনাক্ত

স্টাফ রিপোর্টার

২২ মার্চ ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৩৮ পূর্বাহ্ন

নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্তের ৮ দিন পর শনাক্ত হলো বাকি তিন বাংলাদেশির লাশ। ওই তিন লাশ মোল্লা আলিফুজ্জামান, পিয়াস রায় ও মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের। তাদের লাশ দেশে আনতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন নেপালে কর্মরত বাংলাদেশি হাইকমিশনার মাশফি বিনতে শামস। আজ বা আগামীকাল দেশে আসতে পারে ওই তিন লাশ। এদিকে গতকাল বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন আহত শাহরিন আহমেদ ও মো. শাহীন ব্যাপারির শরীরে অস্ত্রোপচার হয়েছে। ওই দু’জন সহ মো. হোসাইন কবিরকে ওই ইউনিটের আইসিইউতে রাখা হয়েছে। এদিকে দাফনের আগে স্বামী-সন্তানকে শেষ বারের মতো দেখতে হাসপাতাল থেকে গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া আলমুন নাহার অ্যানি বার বার জ্ঞান হারাতে ও বমি করতে থাকায় গতকাল বিকালে তাকে আবার ঢাকা মেডিকেলে নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে নিহত পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের স্ত্রী আফসানা খানমের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।
নেপালের হাইকমিশনার মাশফি বিনতে শামস গতকাল সাংবাদিকদের জানান, নজরুল ইসলাম, পিয়াস রায় ও আলিফুজ্জামানের লাশ শনাক্তের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন আর তাদের লাশ দেশে ফেরত পাঠাতে কোনো বাধা নেই। এ ব্যাপারে ইউএস-বাংলার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা লাশগুলো দেশে নেয়ার জন্য কাজ করছে।
গত ১২ই মার্চ ইউএস-বাংলার বিমান বিধ্বস্তে নিহত ৫১ জনের মধ্যে ২৬ জনই বাংলাদেশের নাগরিক। তাদের মধ্যে ইতিপূর্বে শনাক্ত হওয়া ২৩ লাশ গত সোমবার দেশে আনা হয়। গত সোম ও মঙ্গলবার জানাজা শেষে লাশগুলো দাফন করেন স্বজনরা। এরমধ্যে ওই তিন লাশ আগুনে দগ্ধ হয়ে চেনার উপায় না থাকায় ডিএনএ টেস্টের জন্য আলামতও সংগ্রহ করা হয়। অবশেষে গতকাল বাকি ওই তিন লাশের পরিচয় জানা গেল। অথচ ওই তিন লাশের স্বজনরা নেপাল গিয়ে লাশ না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরেন। আজ বা আগামীকালের মধ্যে ওই লাশগুলো আনা হতে পারে বলে জানা গেছে। লাশের অপেক্ষায় রয়েছে তাদের স্বজনরা। এদিকে ওই দুর্ঘটনায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া ১০ বাংলাদেশির মধ্যে ৭ জনকে এরই মধ্যে দেশে এনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তাদের চিকিৎসায় গঠিত ১৪ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড তাদের চিকিৎসা দিচ্ছে। শাহরিন, শাহীন ও হোসাইন কবির এখন আইসিইউতে এবং অপর চারজন শেখ রাশেদ রুবায়েত, মেহেদী হাসান, তার স্ত্রী সৈয়দা কামরুন্নাহার স্বর্ণা ও আলমুন নাহার অ্যানিকে কেবিনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, শাহরিন ও শাহীন ব্যাপারির অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। পৃথক অপারেশন থিয়েটারে ১০ থেকে ১১ জনের দু’টি চিকিৎসক দল তাদের অস্ত্রোপচার করে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত চলে তা। ৫ ভাগ দগ্ধ শাহরিনের পিঠে ও ৩২ ভাগ দগ্ধ শাহীন ব্যাপারির হাত, পেট ও পিঠে চামড়া লাগানো হয়েছে। আহত সাতজনেরই চিকিৎসা চলছে। এদিকে অপর আহতদের মধ্যে মো. রেজওয়ানুল হক ও ইমরানা কবির হাসি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর ইয়াকুব আলীর চিকিৎসা চলছে দিল্লিতে। দুর্ঘটনায় প্রাণে বেঁচে যাওয়ার পরদিন মারা যাওয়ার খবর শুনে অসুস্থ হয়ে পড়া পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের স্ত্রী আফসানা খানমের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসক। আবিদের লাশ আসার আগের দিন গত রোববার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে (স্ট্রোক) তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। দু’বার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় তার। প্রথমবারে ছিল মৃদু ও পরের বার মারাত্মক। প্রথমে তাকে উত্তরায় বাসার কাছে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পরে সেখান থেকে শেরেবাংলা নগরে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে হাসপাতালের পরিচালক কাজী দীন মোহাম্মদের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি চিকিৎসক দলের তত্ত্বাবধানে তার চিকিৎসা চলছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status