দেশ বিদেশ

ফুলগাজীতে ‘বন্দুকযুদ্ধে যুবক নিহত’ পরিবারের দাবি তুলে নিয়ে হত্যা

ফেনী প্রতিনিধি

১৮ মার্চ ২০১৮, রবিবার, ১০:০৫ পূর্বাহ্ন

ফেনীর ফুলগাজীতে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কাজী মো. এমরান হোসেন সাইফুল (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এ সময় অপর দুই জন গুলিবিদ্ধ হয়। আহত হয় পুলিশের নয় জন সদস্য। উদ্ধার করা হয় এলজি বন্দুকসহ একাধিক দেশীয় অস্ত্র। তবে নিহতের স্বজনদের দাবি, মাটি ব্যবসায়ী সাইফুলকে ‘ঘর থেকে তুলে নিয়ে পুলিশ গুলি করে’ হত্যা করেছে। নিহত সাইফুল ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠান নগর ইউনিয়নের কাঁচারি বাজার এলাকার সৌদি প্রবাসী কাজী মো. হানিফের ছেলে। জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে সাইফুলের নামে থানায় একটি মামলা থাকলেও ডাকাতির কোন মামলা ছিলো না বলেও স্বজনদের দাবি।
ফুলগাজী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হুমায়ুন কবীর জানান, ডাকাতিসহ একাধিক মামলার আসামী সাইফুলকে গ্রেপ্তারের জন্য শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিযান চালায় পুলিশ। উপজেলার জিএমহাট এলাকায় সাইফুলকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশের উপর হামলা করে সে পালিয়ে যায়। হামলায় পুলিশ কনস্টেবল আবুল খায়ের (৪৫) গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে শুক্রবার রাতে একটি মামলা করে। পরে রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাড়ি থেকে সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চালায়। এ সময় জিএমহাট ব্রিকফিল্ডের কাছে গেলে সাইফুলের ‘সহযোগীরা’ পুলিশের ওপর হামলা চালায়। গুলি ছুড়ে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে সাইফুলসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় আহত হয় পুলিশের ৯ সদস্য। পরে আহতদের উদ্ধার করে ফেনী জেলা সদর হাসাপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইফুলকে মৃত ঘোষণা করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি বন্দুক, দুটি কার্তুজ, ৬টি ছোরা, চারটি রামদাসহ বেশকিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। সাইফুলের সহযোগী আহত গাজি এমদাদুল হক ও ইউনুস মিয়া পুলিশ পাহারায় ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
হামলায় আহত পুলিশ সদস্যের মধ্যে ফুলগাজী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন, এসআই রাশেদুল কবির, এসআই আইয়ুব খান, সহাকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) শফিকুর রহমান, কনস্টেবল প্রদীপ কুমার চাকমা, কনস্টেবল ফারুক মিয়া, কনস্টেবল আবুল কাশেম, কনস্টেবল চন্দ্রিকা ত্রিপুরা ফেনী জেলা সদর হাসপাতাল ও ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে নিহতের ভগ্নিপতি মো. হারুনুর রশিদ জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বাড়ি থেকে সাইফুলকে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে রাত ৩টার দিকে জিএমহাট ব্রিকফিল্ডের পাশে সাইফুলের মাথায় গুলি করে হত্যা করে শনিবার ভোরে লাশ হাসপাতালের মর্গে রেখে যায়। আহত দু’জনের মধ্যে গাজি এমদাদুল হক পিকআপ চালক ও ইউনুস রাজমিন্ত্রীর কাজ করে। পুলিশ তাদের পায়ে গুলি করেছে।  
অপরদিকে নিহতের চাচা কাজি শাহ আলম জানান, মাটি ব্যবসাকে কেন্দ্র করে জিএমহাট এলাকার প্রভাবশালী খাজু, কামাল, আলমগীর, সালেহ আহম্মেদসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তার ভাতিজা সাইফুলের বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে প্রভাবশাবলীদের মদতে পুলিশ সাইফুলকে ডাকাত সাজিয়ে গ্রেপ্তারে শুক্রবার অভিযান চালায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status