শেষের পাতা

নি র্বা চ নী হা ল চা ল, শেরপুর- ১

আওয়ামী লীগে বিভক্তি সুযোগ খুঁজছে বিএনপি

মো. ফরিদুজ্জামান, শেরপুর থেকে

১৮ মার্চ ২০১৮, রবিবার, ১০:০০ পূর্বাহ্ন

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেরপুর-১ আসনের মাঠে-ময়দানে সরব আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও জামায়াতের সম্ভাব্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা। পাশাপাশি দলীয় মনোনয়ন পেতে চালাচ্ছেন ব্যাপক তৎপরতা। কড়া নাড়ছেন তৃণমূল নেতাকর্মীদের দরজায়। হাটে-ঘাটে, মাঠে-ময়দানে, পাড়া-মহল্লায় সর্বত্র পোস্টার, ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙিয়ে জানান দিচ্ছেন নিজেদের প্রার্থিতার কথা। আগামী নির্বাচনে শেরপুর-১ আসন খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুই জোটের কাছেই। কারণ, আজও কোনো জাতীয় নির্বাচনে হারেনি আওয়ামী লীগ। তেমনি কখনো বিজয় অর্জন করতে পারেনি বিএনপি। ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা নিয়ে গঠিত শেরপুর সদর-১ আসন। ইতিমধ্যেই আওয়ামী লীগের মনোনয়ন যুদ্ধে পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন দুই নেতা। একজন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক। অপরজন সাবেক ছাত্রনেতা বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু। বিএনপি চাইছে সরকারদলীয় গৃহদ্বন্দ্বের সুযোগ নিতে। এজন্য জোটটির মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তাকিয়ে আছেন কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের দিকে। আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক ও উপজেলা চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানুর দ্বন্দ্ব অঞ্চল ভেদে তা প্রকট আকার ধারণ করেছে। আতিউর রহমান আতিক ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট প্রার্থী যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের মো. কামারুজ্জামানকে হারিয়ে বিজয় লাভ করেন। তাছাড়া শেরপুরের সার্বিক উন্নয়ন এবং এলাকায় সাধারণ মানুষ ও তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ অক্ষুণ্ন থাকায় আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা তারই বেশি। তবে বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু অভিযোগ তুলে বলেন, বর্তমান এমপি আতিউর রহমান আতিক একবার উপজেলা চেয়ারম্যান ও চারবারের এমপির শাসন আমলে শেরপুরের সার্বিক উন্নয়ন, সুষম বণ্টন, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী বাছাইয়ে অনিয়ম ও সর্বশেষ জেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়ায় আওয়ামী লীগে একধরনের বিচ্ছেদমূলক মনোভাব তৈরি হয়েছে।
ছানুয়ার হোসেন ছানু বর্তমান এমপির বিগত দিনের ফিরিস্তি তুলে ধরে সভা-সমাবেশ ও এলাকায় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে দোয়া কামনা করছেন। তার রয়েছে শেরপুরের বিশাল পশ্চিমাঞ্চল, যেটি বিগত দিনে উন্নয়ন বঞ্চিত; যা আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পরাজিত হওয়ার বড় একটি কারণ হতে পারে। এ আসনে আওয়ামী লীগের গৃহবিবাদ না মিটলে বিএনপির দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ তথা মহাজোট ঐক্যবদ্ধ হয়ে আসনটি ধরে রাখবে বলে মনে করেন জোটের একাধিক শীর্ষস্থানীয় নেতা। আওয়ামী লীগে অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকলেও ভোটের ময়দানে বর্তমান এমপি ও হুইপ আতিউর রহমান আতিককে এগিয়ে রেখেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। জোটের একাধিক সূত্র জানান, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ এ কোন্দল সাময়িক। আগামী নির্বাচনের আগেই এ কোন্দল শূন্যের কোঠায় পৌঁছবে। এ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট শিল্পপতি আলহাজ মো. হজরত আলী। তিনি দলের নতুন মুখ হলেও ২০১৩ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ভিতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সার্বিক সহযোগিতা ও এলাকায় তার উপস্থিতি সাধারণ মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে। ফলে এ নেতাকে মনোনয়ন দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছেন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। এর আগে জোটবদ্ধ নির্বাচনে জামায়াতের কামারুজ্জামান একাধিকবার প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। এবার কামারুজ্জামান না থাকায় মনোনয়নের জন্য তিনি জোরালো প্রার্থী। তবে এ আসনে কামারুজ্জামানের বড় ছেলে ওয়াফিউজ্জামান প্রার্থী হতে পারেন বলে একাধিক সূত্র জানায়। অপরদিকে জাতীয় পার্টির শাসন আমলে দুবারের এমপি রফিকুল বারী চৌধুরী আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর জেপিতে যোগ দিয়ে বিগত ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে সাইকেল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হন। পরে ২০১০ সালে বিএনপিতে যোগ দেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক মাঠে না থাকলেও এবারের নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মনোনয়ন চাইতে পারেন বলে দলের একাধিক সূত্র জানান। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আলহাজ ইলিয়াস উদ্দিন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status