প্রথম পাতা

বিপাশার পরিবারে আর কেউ রইল না

ফরিদ উদ্দিন আহমেদ

১৪ মার্চ ২০১৮, বুধবার, ৮:১৪ পূর্বাহ্ন

রাজধানীর শুক্রাবাদের চার তলা ৮১ নম্বর বাড়িতে চলছে  শোকের মাতম। এ বাড়িতেই স্ত্রী সানজিদা হক বিপাশা এবং ছয় বছরের সন্তান অনিরুদ্ধকে নিয়ে সুখের সংসার ছিল রফিকুজ্জামান রিমুর। সব সুখই কেড়ে নিয়েছে নেপালে বিমান দুর্ঘটনা। অন্যদিকে একই পরিবারের তিন সদস্য হারিয়ে স্বজনরা বাকরুদ্ধ। বাড়িতে প্রতিবেশীর ভিড় আর পরিবারের সদস্যদের বিষণ্ন চেহারা উৎকণ্ঠিত করে তুলছে বৃদ্ধা রিমুর মাকে। রিমুর বৃদ্ধা মা স্বজনদের কাছে জানতে চান, তার ছেলে কোথায় গেছে। কি হয়েছে। তখনো তিনি জানেন না তার আদরের ধন রিমু ও তার পরিবার এই দুনিয়ায় আর নেই। সরজমিন ওই বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিন তলায় থাকতেন রফিক-সানজিদা দম্পতি ও তার মা। একই বাড়ির চার তলায় থাকেন রিমুর বড় বোন ডাক্তার ঝুমা। বড় ভাই রাজু থাকেন কানাডায়। ছোট বোন থাকেন জাপানে। গত প্রায় দশ বছর আগে রফিক-সানজিদা দম্পতির বিয়ে হয়। রিমুর বন্ধু নাজমুল জানান, সপ্তাহখানেকের জন্য তার বন্ধুর পরিবারটি ঘুরতে গিয়েছিলেন নেপালে। হাসি খুশী ছিলেন রফিক। সব সময়ই মানুষের উপকার করার চেষ্টা করতেন। রফিক আগে বিভিন্ন চাকরি করলেও শেষ পর্যন্ত তিনি প্রতিবন্ধীদের একটি সংস্থায় কাজ করতেন। তার আরেক বন্ধু এবং প্রতিবেশী ছোটন জানান, ১০/১৫ দিন আগে তাকেও নেপাল ভ্রমণে যাওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন রফিকুজ্জামান। কিন্তু ছোটনের বাচ্চার পাসপোর্ট না থাকায় তিনি যেতে পারেননি। রিমু তাকে জানিয়েছিলেন সময় সুয়োগ হয় না, এখন একটু সময়ে হয়েছে তাই ঘুরতে যাচ্ছেন। এদিকে যশোর উপশহরের বাসিন্দা সাবেরুল হকের মেয়ে সানজিদা হক বিপাশা (৩৮)। কর্মরত ছিলেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজনের) প্রোগ্রাম অফিসার পদে। আর সাংবাদিকতা ছেড়ে প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে বেসরকারি সংস্থা এএনএফডব্লিউডিওতে কাজ করতেন। বলা চলে সানজিদা-রফিকের যেন এক মানবতার সংসার। এই দম্পতির ছেলে অনিরুদ্ধ জামান ধানমণ্ডি বয়েজ স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তো। তবে, ঢাকার যান্ত্রিক জীবন ছেড়ে একমাত্র সন্তান অনিরুদ্ধকে নিয়ে হিমালয় কন্যা নেপালে বেড়ানোর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন ইউএস বাংলা এয়ারওয়েজে। নিকটজনেরা দাবি করছেন, বিভিন্ন সূত্রে তারা এই পরিবারের তিন জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছেন। সাবেরুল হকের তিন সন্তানের মধ্যে সানজিদা হক বিপাশা সবার বড়। তবে, সানজিদা হকের দুই ভাই মিথুন ও মঈন। তারাও ঢাকায় বসবাস করেন। সানজিদা হক বিপাশার চাচাতো ভাই ফজল মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেন, ১২ই মার্চ বিকাল ৪টার দিকে তারা খবর পেয়েছেন বিমান বিধ্বস্তের। এরপর ঢাকায় বসবাস করা ভাইদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status