গ্রন্থমেলা-২০১৮

অমর একুশে গ্রন্থমেলা

বিক্রি বাড়ায় প্রকাশকদের মুখে হাসি

মুনির হোসেন

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শনিবার, ৯:১৯ পূর্বাহ্ন

 অমর একুশে গ্রন্থমেলার সময় যতো ফুরিয়ে আসছে ততই দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ছে। আর দর্শনার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতিতে বেচাবিক্রিও প্রতিদিন বাড়ছে। তাই প্রকাশকরাও বেজায় খুশি। গতকাল অমর একুশে গ্রন্থমেলার শেষ শুক্রবার ছিল। এবারের মেলা অন্য যে কোন মেলার থেকে ছুটির দিন বেশি পেয়েছে। তাই ছুটির দিনে মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়ও থাকতো বেশি। একুশে ফেব্রুয়ারিসহ এ পর্যন্ত মেলায় ৯দিন ছিল ছুটির দিন। প্রতিদিনই মেলার ঝাঁপি খুলেছে সকালে। ছুটির দিন আসলেই বেচাকেনা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। তাইতো এমন দিনে বেজায় খুশি থাকেন প্রকাশক ও বিক্রিয় কর্মীরা। গতকাল অমর একুশে গ্রন্থমেলার সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, পূর্ব-ঘোষিত শিশুপ্রহর থাকায় সকাল ১১টায় মেলার ঝাঁপি খোলার পর থেকে দর্শনার্থীরা অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে প্রবেশ করেছে গ্রন্থমেলায়। শিশুপ্রহর বলা হলেও সব বয়সী পাঠকেরই অংশগ্রহণ ছিল সকালের মেলায়। তবে কোমলমতি শিশুদের অংশগ্রহণ মেলার শ্রী বৃদ্ধি করেছে। বাবা-মায়ের হাত ধরে তারাও মেলায় আসে। বিমোহিত হয় নতুন সব বইয়ের গন্ধে। আর পছন্দের সব বই কিনেও নিয়েছে তারা। তবে বরাবরের মতো গতকালও শিশুদের ঝোঁক ছিল কল্পবিজ্ঞান, কার্টুন, ছড়ার বইয়ে।  রাজধানীর এন আলম মেরি কেয়ার স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র তাওসিফ আহমেদ রাইয়ান মেলা থেকে কিনেছে- বইটি হাতে নাও বিজ্ঞানি হয়ে যাও, সাকিব আল হাসানের হালুম নামে দু’টি বই। জানতে চাইলে সে বলে, ‘আমার কাছে সব বইই পড়তে ভালো লাগে। এর আগেও একদিন এসেছি, মেলা থেকে বই কিনতে মজাই লাগে।’ শেরে বাংলা স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আইমান আহমেদ কিনেছে- বইটি হাতে নাও বিজ্ঞানী হয়ে যাও এবং ধাঁধা নামে দু’টি বই। সে বলে, ‘আমার কাছে রম্য রচনা, ছড়ার বই পড়তে ভালো লাগে।’
পঙ্খিরাজ প্রকাশনীর প্রকাশক দেওয়ান আজিজ বলেন, ‘বেচাবিক্রি ভালোই চলছে। ছুটির দিনে একটু বেশিই থাকে।’ ওয়ার্ল্ড অব চিলড্রেন্স বুক এর ম্যানেজার রাসেল মীর্জা বলেন, ‘আজতো শুক্রবার তাই সকাল থেকেই বেচাবিক্রি ভালো।’ এদিকে শিশুপ্রহর সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত থাকার কথা থাকলেও গতকাল সকালে শুরু হওয়া মেলা চলে লাগাতার রাত ৯টা পর্যন্ত। দুপুরে ১টা থেকে ৩টা বাংলা একাডেমি কর্তৃক ঘোষিত বেচাবিক্রি বন্ধ থাকার কথা থাকলেও দর্শনার্থীদের চাপে স্টল বন্ধ করতে পারেনি প্রকাশকরা। ঐতিহ্য প্রকাশনীর এক বিক্রয়কর্মী বলেন, ‘দুপুরে পাঠকের চাপের কারণে বন্ধ রাখা সম্ভব হয়নি।’ বিকাল আড়াইটা থেকে মেলার উভয় অংশে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। হাজার হাজার দর্শনার্থী সুশৃঙ্খলভাবে মেলায় প্রবেশ করেছেন। ঐতিহ্য প্রকাশনীর প্রকাশক আমজাদ হোসেন কাজল বলেন, ‘বেচা-বিক্রিরতো এখনই সময়। তাই ভালোই চলছে। দর্শনার্থী আসছেন, তারা পছন্দের বই পেলেই কিনে নিচ্ছেন।’ আর কাকলী প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী নাসির উদ্দিন সেলিমকে বেচা-বিক্রি কেমন চলছে জিজ্ঞেস করতেই বলেন, ‘খুব ভালো চলছে।’ এ সময় তাকে খুব উচ্ছ্বসিত দেখা যায়।
গতকালকের মেলা:  গতকাল মেলা চলে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত গ্রন্থমেলায় ছিল শিশুপ্রহর। বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় শওকত আলীর সাহিত্যসাধনা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবু হেনা মোস্তফা এনাম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফারজানা সিদ্দিকা এবং তারেক রেজা। সভাপতিত্ব করেন- অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। সন্ধ্যায় ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
শেষ হলো দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন: এদিকে গতকাল দু’দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলনের শেষ দিন ছিল। একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ এশিয়ার কবিতা শীর্ষক আলোচনাপর্ব। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক কায়সার হক। আলোচনায় অংশ নেন নেপালের লেখক আভি সুবেদি,  কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, অধ্যাপক সোনিয়া নিশাত আমিন এবং সাদাফ সায্‌।  বেলা ১২টায় দক্ষিণ এশিয়ার ভাষা এবং অনুবাদ  শীর্ষক সমাপনী আলোচনা পর্বে বক্তব্য উপস্থাপন করেন অধ্যাপক আবদুস সেলিম। আলোচনায় অংশ নেন রাশিদ আসকারী, ফায়েজা হাসানাত এবং জিএইচ হাবীব।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status