দেশ বিদেশ

আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করা হবে: ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার

২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শনিবার, ৯:১৯ পূর্বাহ্ন

 ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও হারিয়ে যাওয়া গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ভেবেছিল খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করলেই বিএনপি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাবে। কিন্তু তাদের সেই আশার গুড়েবালি। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি এখন আরো ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশ মিলনায়তনে একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ফখরুল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে ভিত্তিহীন মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানোয় দল এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমেই চেয়ারপারসনকে মুক্ত করা হবে। নেত্রীর নির্দেশে ধৈর্যের সঙ্গে আমরা পরিস্থিতি মোকাবিলা করে যাচ্ছি। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থেকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্যদিয়ে নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। কোনো ধরনের উস্কানির ফাঁদে পা দেয়া যাবে না। বিএনপির যেসব নেতা কারাগারের বাইরে আছে, তাদের একমাত্র দায়িত্ব নিজেদের ঐক্যবদ্ধ করে সমস্ত শক্তিকে সংগঠিত করে একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। সেই আন্দোলনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। বর্তমান সরকার বাংলাদেশের মানুষের ভোটের, স্বাধীনভাবে চলাফেরা করার, সুষ্ঠু সুন্দর জীবনযাপন করার অধিকার হরণ করেছে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, যে খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বেশি আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন এবং গণতন্ত্রকে মুক্ত করেছেন, আজকে তাকে পরিত্যক্ত ও অন্ধকার কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সরকারি সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে সারা দেশে নৌকার পক্ষে ভোট চাচ্ছেন। আর অন্যদিকে আমাদের নেত্রীকে অন্ধকার কারাগারে দিন পার করতে হচ্ছে। এটা কখনো গণতন্ত্র হতে পারে না। এটা কখনো সবার জন্য সমান মাঠ হতে পারে না। উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আজ পরীক্ষার সময়। এরকম পরীক্ষা বোধ হয় এর আগে জাতিকে দিতে হয়নি। আজকে আমরা যে সংগ্রাম করছি, তা বিএনপি বা খালেদা জিয়ার জন্য নয়। এই সংগ্রাম দেশকে রক্ষা করার জন্য এবং দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য। এই সরকারের আমলে বিএনপি চেয়ারপারসন থেকে তৃণমূলের নেতাকর্মী সবাইকে কারাগারে যেতে হয়েছে। এমন কোনো নেতা নেই যার নামে মামলা নেই। সারা দেশের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারাও মামলার আসামি। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারাগারে যেতে হয়েছে। শত শত নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে, খুন করা হয়েছে। এ অবস্থায় একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র চলতে পারে না। আমাদের ধৈর্যের সঙ্গে আন্দোলন করে বিজয় অর্জন করতে হবে। প্রধান অতিথির বক্তব্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া কারাগারে গিয়ে আরো শক্তিশালী হয়েছেন। রাজপথে স্লোগান হচ্ছে ‘আমার নেত্রী আমার মা জেলে থাকতে দেবো না’। তিনি দেশনেত্রী থেকে দেশ মাতায় পরিণত হয়েছেন। তিনি আরো বলেন, বর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। আগামী দিনে আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে নেত্রীকে মুক্ত করে আনতে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে কারাগারে থাকলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কোনো ক্ষতি করতে পারেননি। তিনি (খালেদা জিয়া) আগে ছিলেন দেশনেত্রী, আর তাকে কারাগারে নেয়ার কারণে এখন তিনি সারা দেশের মানুষের মা হয়ে গেছেন। আজ সারাবিশ্ব বলছে, প্রধানমন্ত্রী এক ব্যক্তির শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়েছেন।
খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়ার পেছনে সরকারের একমাত্র কারণ, শেখ হাসিনা এক ব্যক্তির শাসনব্যবস্থা কায়েম করতে চান। কিন্তু তার সেই ইচ্ছে পূরণ হবে না। বিএনপি ও খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে আর কোনো নির্বাচন বাংলাদেশে হবে না। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে বিএনপি দুর্বার আন্দোলন করবে।
উল্লেখ্য, আলোচনা সভার সভাপতি ও দলের মহাসচিবের বক্তব্যের আগে দলের সহ- আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সঙ্গীতশিল্পী বেবি নাজনীন কারারুদ্ধ বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে তৈরি প্রতিবাদী সঙ্গীত পরিবেশন করেন। দলীয় নেতাকর্মীদের আন্দোলনে উৎসাহ দেয়ার জন্য গানটি রচনা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনা ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য জয়নুল আবেদিন ফারুক, মনিরুল হক চৌধুরী, গোলাম আকবর খন্দকার, হাবীবুর রহমান হাবীব, আতাউর রহমান ঢালিসহ বিএনপি ঢাকা মহানগর, যুবদল, মহিলা দল ও ছাত্রদলসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status