বাংলারজমিন

শ্রীমঙ্গলে নির্যাতিত স্কুলছাত্রীর আকুতি ‘আমি স্কুলে যাইতে চাই,

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার, ৯:২২ পূর্বাহ্ন

‘ডরাইয়া নির্যাতনের কথা বাড়িত কইছি না। আমি স্কুলে যাইতে চাই। পড়তাম চাই। কিন্তু ভয়ে স্কুলে যাইরাম না। আমি এই নির্যাতনের বিচার চাই।’ এভাবেই বলছিল শ্রীমঙ্গলের মির্জাপুর ইউনিয়নের পাশবিক নির্যাতনের শিকার অষ্টম শ্রেণীর এক ছাত্রী। নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে ওই স্কুলছাত্রী জানায়- ‘গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি স্কুলে আসার পথে ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বকুল মিয়ার ছেলে মো. সাকিব উজ্জামান নাজিম ও কবির মিয়ার ছেলে ফখরুল ইসলাম তাকে ও তার অপর এক সহপাঠীকে সিএনজি অটোরিকশায় তুলে গ্রামের কোদালী ঘাটের স্লুইস গেটের পাশের একটি খালি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের পাশবিক নির্যাতন চালায়। এ ঘটনার দুদিন পর এক বান্ধবীর বাড়ি যাওয়ার পথে সে ও তার আরেক সহপাঠীকে এলাকার নাজিম ও ফখরুল তাদের পথ আটকিয়ে জোর করে ধরে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। এসময় তাদের স্কুলের অফিস সহকারীকে দেখে ছেলেরা পালিয়ে যায়। তখন তাদের সাথে ছিল লামাপাড়া গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে নাছির উদ্দিন, কাশিপুর গ্রামের কাদির মিয়ার ছেলে মাসুম মিয়া, তৈয়ব আলীর ছেলে জোবায়ের, বুট্টি মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া। পরে ওই অফিস সহকারী সমীরণ কুমার দত্ত তাদেরকে স্কুলে নিয়ে এলে এ ঘটনাটি তারা স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপ-পুলিশ পরিদর্শক ফজলুর রহমানকে খুলে বলে।
ওদিকে ওই দিন রাতে নির্যাতনের শিকার দুইপরিবারের সঙ্গে মির্জাপুর ইউনিয়নের লামাপাড়া গ্রামের মৃত আকাব আলী মেম্বারের ছেলে শফিক ও বাজারের ব্যবসায়ী জামাল আহমেদের মধ্যস্থতা হয়। সাব্যস্ত হয় থানায় কোন অভিযোগ না করে দুই স্কুলছাত্রীর পরিবারকে ৭০ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ চল্লিশ হাজার টাকা দেয়ার।
পেশায় মৎস্যজীবি এক স্কুল ছাত্রীর পিতা বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। হেরার লগে আমি টাক্কর দিতাম পারতাম না আমি। এই কথা মাইনষে আমারে বুঝ দেয়। আপসে যাওয়ার লাগি। রাতে গ্রামের আকাব আলী মেম্বারের ছেলে শফিক তাকে বলে- মামলা করে কি লাভ হবে। তুমি সবুর করে নাও। তোমাকে মেয়ের ভবিষ্যতের জন্য ৭০ হাজার টাকা দেয়া হবে। আমার মেয়েটি এখন ভয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিছে। মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই ফজলুর রহমান সালিসে উপস্থিত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি পুলিশ, আমি সালিশে যাব কেন। বিষয়টি জানার পর আমি ছেলে মেয়েদের সবাইকে থানায় নিয়ে যাই। পরে কি হয়েছে সেটা ওসি সাহেব জানেন’।
শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম নজরুল বলেন, ‘ওই দুই স্কুলছাত্রীর পরিবার থানায় মামলা করতে রাজি হয়নি। তাছাড়া তারা থানায় মামলা করবে না বলে লিখিতও দেয়’।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status