বিনোদন

আলাপন

‘আমি সেই কঠিন কাজটি করতে চাই’

এন আই বুলবুল

২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বৃহস্পতিবার, ৯:৪৯ পূর্বাহ্ন

আজকাল শুদ্ধ বাংলার পরিবর্তে প্রচুর আঞ্চলিক ভাষায় টিভি নাটক নির্মাণ হচ্ছে। ফলে শুদ্ধ বাংলা না জানা অনেকেই নাটকে অভিনয় করার সুযোগ পাচ্ছেন। যাকে ইচ্ছে তাকে শিল্পী বানানো সম্ভব হচ্ছে-এমনটা মন্তব্য করলেন জনপ্রিয় অভিনেতা প্রাণ রায়। তিনি আরো বলেন, এক সময়ে শুদ্ধ বাংলায় কথা বলতে পারা শিল্পীদের টিভি নাটকে দেখা যেত। কিন্তু এখন সেটার প্রয়োজন মনে করে না অনেক নির্মাতা। এছাড়া আগে নাটকে একান্তই চরিত্রের প্রয়োজনে  আঞ্চলিক ভাষার প্রয়োগ ছিলো। কিন্তু এই সময়ের নাটক মানেই যেন আঞ্চলিকতা থাকতে হবে। অধিকাংশ নাটকেই দেখি বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষা। সেই কারণে নতুন প্রজন্মের মধ্যে শুদ্ধ বাংলা ভাষার চর্চাও কমে যাচ্ছে। আমি জানি এই আঞ্চলিক ভাষাও আমাদের বাংলা ভাষার একটি অংশ। তাই বলে সব নাটকে আঞ্চলিকতা রাখতে হবে এমনটা নয়। এ থেকে উত্তরনের উপায় কি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সমাজকে পরিবর্তন করার দায়িত্ব আমাদের সকলের। এই ক্ষেত্রে টিভি মিডিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। টিভি চ্যানেলগুলোকে নাটকের এই আঞ্চলিকতার বিষয় থেকে বের হয়ে আসতে হবে। কারণ এখন অনেক চ্যানেলের নির্মাতাদের কাছে চাহিদা থাকে যেভাবেই  হোক দর্শকদের হাসাতে হবে। আমার মনে হয়, দর্শকদের হাসানোর জন্য আমরা আরো নিচে নেমে এলেও সেসব চ্যানেলের আপত্তি থাকবে না। এবার আসা যাক এই অভিনেতার বর্তমান ব্যস্ততায়। মারুফ মিঠুর ‘ভলিউমটা কমান’, সঞ্জিব সরকারের ‘মজনু একজন পাগল নহে’, এফ জামান তাফসের ‘নিউটনের তৃতীয় সূত্র’সহ একাধিক ধারাবাহিক নাটকের কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন বলে জানান তিনি। এই সময়ের নাটকগুলোতে অভিনয় করে কতটা তৃপ্ত প্রাণ রায়? এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অভিনয় আমার পেশা। এটি ছাড়া আমি অন্য কিছু করতে পারি না। সেই কারণে অনেক সময় পেশার খাতিরেই আমাকে কাজ করতে হচ্ছে। এরমধ্যেও আমি চেষ্টা করি ভালো গল্প-চরিত্রের নাটকে কাজ করতে। ছোট পর্দার বাইরে চলচ্চিত্রেও এই অভিনেতাকে দেখা গেছে। ‘নদীজন’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’, ‘মোল্লা বাড়ির বউ’, ‘ডাক্তার বাড়ি’ ও ‘লাল সবুজ’সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করে তিনি বেশ প্রশংসিত হয়েছেন। আসছে ১লা মার্চ থেকে তিনি শুরু করবেন ‘মায়া’ শিরোনামের নতুন একটি চলচ্চিত্রের কাজ। এটি পরিচালনা করছেন মাসুদ পথিক। এই ছবিতে তাকে কিভাবে দেখা যাবে এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমি গ্রামের একজন সহজ-সরল ছেলের চরিত্রে অভিনয় করবো। ছেলেটি প্রকৃতিপ্রেমি। এটি অনেক সিরিয়াস একটি চরিত্র। বাস্তবেও আমি প্রকৃতিপ্রেমি। নিজের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় চরিত্রটি আমার বেশি ভালো লেগেছে। এটি ছাড়া এই অভিনেতার আরো দুটি চলচ্চিত্র মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে বলেও জানান। চলচ্চিত্র দুটি হলো আহসান সারোয়ারের ‘রং ঢং’ ও আশরাফ শিশিরের ‘আমরা একটি সিনেমা বানাবো’। নাটক-চলচ্চিত্রে এই অভিনেতাকে কমেডি চরিত্রে বেশি দেখা যায়। তবে এবার তিনি অন্যরকম একটি ইচ্ছে প্রকাশ করলেন। চলচ্চিত্রে নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করতে চান তিনি। এটি কেন? এই সম্পর্কে তার অভিমত, নেতিবাচক চরিত্রের মধ্য দিয়ে একজন শিল্পীকে ভাঙ্গা যায়। এছাড়া পজেটিভ চরিত্রের চেয়ে নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করা কঠিন। আমি সেই কঠিন কাজটি করতে চাই। আজকের আলাপনে সর্বশেষ তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, একজন শিল্পীর টিকে থাকার জন্য করণীয় কি? তিনি বলেন, একজন শিল্পীকে সময় সচেতন হতে হবে। সময়ের সঠিক ব্যবহার না করলে তিনি হারিয়ে যাবেন। এছাড়া চরিত্র নিয়েও ভাবা প্রয়োজন। চরিত্রের মধ্যে সঠিকভাবে প্রবেশ করতে না পারলে সেটা দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায় না। এই দুটি বিষয়কে সমন্বয় করতে পারলে একজন শিল্পী দীর্ঘ সময় টিকে থাকতে পারে বলে আমি মনে করি। চ্যানেলের সংখ্যা বাড়ার কারণে আমাদের টিভি নাটকের নির্মাণের সংখ্যাও বেড়েছে। প্রায় নাটকে নতুন মুখ দেখা যায়। কিন্তু সঠিকভাবে নিজেকে উপস্থাপন করতে না পারায় কিছু দিন পর এদের অনেকেই হারিয়ে যায়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status