ভারত

আগের রাত থেকেই পশ্চিমবঙ্গে ভাষা দিবস পালিত

কলকাতা প্রতিনিধি

২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বুধবার, ৩:০৫ পূর্বাহ্ন

ভাষার আবেগে দুই বাংলা সমানভাবে আপ্লুত। আর তাই একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গে আগের দিন সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। বুধবার সারাদিন জেলায় জেলায় পালিত হচ্ছে ভাষা দিবস স্মরণে অনুষ্ঠান। এ উপলক্ষ্যে জেলায় জেলায় তৈরি হয়েছে ভাষা শহীদদের স্মরণে অস্থায়ী অসংখ্য মিনার । বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডে এবারই প্রথম দুই বাংলা যৌথভাবে পালন করছে ভাষা বিদস। সারাদিন আয়োজন করা হয়েছে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ভাষা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে বলেছেন দুই দেশের রাজনীতিক ও বিশিষ্টজনেরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরেই যশোহর রোড পাল্টে গিয়েছিল এক অন্য চেহারায়। মোমবাতি হাতে অসংখ্য মানুষের মিছিল চলেছে যশোর রোড ধরে। সকলে গাইছেন, ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি’। কারও হাতে রফিক-সালাম-বরকত-শফিউর-জব্বারদের ছবি। কেউ কবিতা পাঠ করেছেন। কেউ বক্তৃতা করে চলেছেন। বনগাঁ ও হাবড়া শহরের সাহিত্যিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, শিক্ষক, স্কুলপড়ুয়ারা যেমন ভাষা দিবসকে স্মরণ করতে পথে নেমেছিলেন তেমনি বরকতের গ্র্রাম মুর্শিদাবাদের বাবলা গ্রামে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী বরকত মেলা। বুধবার সকালে বরকতের আবক্ষ মূর্তিতে মাল্যদানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠান। এদিকে কলকাতায় ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। কার্জন পার্কের শহীদ স্মারকে মালা ও পুষ্প স্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন শিল্পী ও সাহিত্যিকরা। ময়দানের অদূরে ২১শে উদ্যানে ভাষা শহীদদের স্মরণে তৈরি ভাস্কর্যের সামনে পালন করা হয়েছে ভাষা দিবস। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও কলকাতা পুরসভার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বুধবার সকালে ভাষা শহীদ স্মারকে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর স্টেডিয়ামে জেলা প্রশাসনের তরফে আয়োজিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে দেশপ্রিয় পার্কের ভাষা শহীদ স্মারকেও এদিন শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ। ভাষা ও চেতনা সমিতির উদ্যোগে কলকাতায় বাংলা আকাদেমির সামনে মঙ্গলবার সারারাত পালিত হয়েছে বাংলা ভাষা উৎসব। সেখানে যোগ দিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ, অসম, বাংলাদেশ ও মেঘালয়ের শিল্পীরা। রাত ১২টার সময় হয়েছে মশাল মিছিল। হয়েছে বাউল, ফকির, সুফিগান ও কীর্তনও।  বুধবার সারাদিন হচ্ছে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশনেও যথাযোগ্য মর্যাদায় ভাষা শহীদদের স্মরণ করা হয়েছে। এদিন সকালে আয়োজিত এক প্রভাত ফেরিতে হাইকমিশনের কূটনীতিক, কর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা ছাড়া বহু সাধারণ মানুষ প্রভাত ফেরীতে পা মিলিয়েছিলেন। এরপর মিশন প্রাঙ্গণে তৈরি শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সমবেত সকলে। পরে পতাকা উত্তোলন, বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠের মধ্য দিয়ে সকালের অনুষ্ঠান শেষ হয়। বিকেলে আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা। একদিকে যেমন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে এই দিনটির স্মরণে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে, তেমনি রাজ্যের বাইরে ঝাড়খন্ডে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা সমিতির তরফে ভাষা দিবস সামম্বরে  সাড়ম্বরে পালিত হয়েছে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status