বাংলারজমিন

দু’মাসেও সন্ধান মিলেনি যুবলীগ নেতা সবুজের

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে

২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, মঙ্গলবার, ৯:০৫ পূর্বাহ্ন

অপহরণের পর থেকে নিখোঁজ খুলনার যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান সবুজ (৩০)’র গত প্রায় দু’মাসেও সন্ধান মেলেনি। খুলনা থেকে কৌশলে অপহরণের পর থেকে পুলিশ ও স্বজনদের উদ্যোগে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদীতে ডুবুরি দিয়ে খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ভাগ্যে কি ঘটেছে তাও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ। তবে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া সাত আসামির মধ্যে আদালতে তিনজনের স্বীকারোক্তি মতে সবুজকে নদীতে ফেলে দেয়া বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। একটি ৫ তলা ভবনের ডিজাইন করার কথা বলে গত বছরের ২৩শে ডিসেম্বর সকালে খুলনা থেকে গাড়িতে করে কেডিএ’র সার্ভেয়ার সামছুল আরেফিন রনি (৩৪) ও যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান সবুজ (৩০)কে মোরেলগঞ্জে নেয়া হয়। দুপুর ১২টার দিকে একটি ট্রলারে করে সন্ন্যাসী এলাকায় যাবার সময় সবুজ ও রনিকে মারপিট করে নদীতে ফেলে দেয় অপহরণকারীরা। ওই সময় রনির ডাক চিৎকারে মোরেলগঞ্জের গাবতলা এলাকার ট্রলার চালকরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। কিন্তু নদীতে ডুবে যায় সবুজ। তার সন্ধানে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে তল্লাশি চালায়। কিন্তু তার সন্ধান মিলেনি। সবুজ খুলনা মহানগরীর ২০ নং ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা এবং দু’জনেরই বাড়ি খুলনার শেখপাড়া এলাকায়। এদিকে ঘটনার পর রনি’র মামা আওয়ামী লীগ নেতা মল্লিক আবিদ হোসেন ১১ই ডিসেম্বর বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- ওহিদুজ্জামান হাসান ওরফে পরশ (২১), হাফিজুল ইসলাম (১৯), মো. মাহামুদ (১৯), মো. হাসিব হাওলাদার (১৯), হাছিব হাওলাদার (১৮), মো. হাফিজুর রহমান (১৯) ও সাইফুল ইসলাম (২০)। সাতজনকে আদালতে হাজিরার পর এদের মধ্যে তিনজন আসামি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মহানগর হাকিম মো. শাহীদুল ইসলাম গত ২৫শে ডিসেম্বর এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
জবানবন্দিতে তারা এ অপহরণ ও সবুজকে পানিতে ফেলে দেয়ার কথা স্বীকার করেছে। অপহরণের জন্য তাদেরকে তুহিন নামের এক ব্যক্তি ভাড়া করেছিল বলে স্বীকারও করে। তবে তুহিন নামের ওই ব্যক্তির সাথে  কেডিএ’র সার্ভেয়ার সামছুল আরেফিন রনি (৩৪) ও যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান সবুজ (৩০)’র কি দ্বন্দ্ব ছিল তা জানা যায়নি। তাছাড়া তুহিনের নাম বাদে অন্য কোনো কিছুই প্রকাশ পায়নি।
সবুজের নিকট আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, এ ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন করে সবুজের সঙ্গে আসলে কি হয়েছে তা  জানা জরুরি। যা প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে সঠিক তদন্ত হলে অন্তরালে ভিন্ন কিছুও বেরিয়ে আসতে পারে।   
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম জানান, শেখপাড়া পুরাতন মসজিদ রোডের মৃত নুুরুজ্জামানের ছেলে কামরুজ্জামান সবুজ (৩০)’র সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় পালিয়ে ফিরে আসা খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সার্ভেয়ার শামছুল আরেফিন রনি (৩৪) তেমন কোন তথ্য দিতে পারেননি। তবে কি কারণে অপহরণ ও হত্যা চেষ্টা হয়েছে, তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। গ্রেফতার হওয়া আসামিদের বিরুদ্ধে আগেও এধরনের দু’একটি ঘটনায় জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে বলেও জানান তিনি। তুহিনের শুধু নামটাই আসামিরা বলেছে, কিন্তু তার বাবার নাম বা ঠিকানা কিছুই তাদের জানা নেই বলে বলেছে। এ ঘটনার তদন্ত অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status