শেষের পাতা

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আগে আরসা দমন করতে চায় মিয়ানমার

কূটনৈতিক রিপোর্টার

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, সোমবার, ১০:২১ পূর্বাহ্ন

আরাকান সালভেশন আর্মির (আরসা)’র সদস্যদের দমনে ফের বাংলাদেশের সহায়তা  চেয়েছে মিয়ানমার। শুক্রবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বিষয়টি তুলেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চাও সোয়ে। প্রত্যাবাসন শুরুর আগেই এদের পাকড়াও এবং হস্তান্তরে ঢাকার সুনির্দিষ্ট অঙ্গীকার চেয়েছে নেপি’ড। সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রী পর্যায়ের ওই বৈঠক সূত্র বলছে, গত বছরের নেপি’ডর এক বৈঠকে আরসার ১৩০০ সদস্য বাংলাদেশ সীমান্তে রয়েছে মর্মে একটি তালিকা দিয়েছিল মিয়ানমার। ওই সদস্যদের কর্মকাণ্ডের কিছু ছবি দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে হস্তান্তরের দাবি করেছিল অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন সরকার। সেই সময়ে বাংলাদেশ তাদের অস্তিত্ব অস্বীকার করেছিল। শুক্রবারের বৈঠকে মিয়ানমারের মন্ত্রী তাদের সরবরাহ করা তালিকাভুক্ত ‘সন্ত্রাসী ও অপরাধী’দের বিষয়ে তদন্তের অগ্রগতি জানতে চান। জবাবে ঢাকা নেপি’ডর আগের দেয়া তালিকাভুক্ত ‘সন্ত্রাসী’দের বিষয়ে আরো তথ্য এবং তাদের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর তাগিদ দিয়েছে। ওই বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও  মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চাও সোয়ে নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে ১৯৮০ সালের মিয়ানমার-বাংলাদেশ বর্ডার চুক্তি অনুযায়ী আরসা সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে তাদের মিয়ানমারের হাতে তুলে দেয়ার ফের অনুরোধ জানানো হয়। মিয়ানমার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি এবং ঢাকার কর্মকর্তাদের সরবরাহ করা তথ্য মতে, প্রায় ৩ ঘণ্টার ওই বৈঠকে দুই দেশের সীমান্তে নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি নিয়ে কাজ করা, অবৈধভাবে মাদক পরিবহনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ, দুই দেশের সীমান্তের নিরাপত্তা বিষয়ে সমঝোতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং নৌ-সীমান্তে অপরাধ দমনের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের তরফে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যক্রম শুরুর তাগিদ দেয়া হয়। একই সঙ্গে প্রত্যাবাসনের জন্য ৮০৩২ জন রোহিঙ্গার একটি প্রাথমিক তালিকা হস্তান্তর করা হয়। মিয়ানমারের মন্ত্রী এটি গ্রহণ করেন এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে প্রত্যাবাসন শুরুর কথা জানান। বাংলাদেশের তরফে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন এবং তাদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে বসবাসের পরিবেশ সৃষ্টির ওপর জোর দেয়া ছাড়াও রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের প্রবেশ বন্ধে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দেয়া হয়। মিয়ানমারের তরফে টেকসই প্রত্যাবাসনে ৩ ধাপে ব্যবস্থা গ্রহণের অঙ্গীকার করা হয়। এদিকে ইয়াংগুনের মিডিয়া আউটলেট, দ্য নিউ গ্লোবাল লাইট অব মিয়ানমার ওই বৈঠক সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নিরাপত্তা সেক্টরের আলোচনা ও সহযোগিতা বিষয়ে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী দুই দেশের অনুমোদিত কর্মকর্তাদের মধ্যে পরবর্তীতে নিয়মিত বৈঠক আয়োজনে জোর দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রতিমন্ত্রী এবং সচিব পর্যায়ে বার্ষিক সভার আয়োজন করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে মন্ত্রী পর্যায়েও এ ধরনের সভার আয়োজন করা হবে বলে বৈঠকে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। পারস্পরিক সমঝোতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড এবং মিয়ানমার বর্ডার পুলিশের বিভিন্ন স্তরে এবং বিভিন্ন  ক্ষেত্রে আলোচনার ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা হবে বলেও ঐকমত্যে  পৌঁছেছে দুই পক্ষ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status