শেষের পাতা

সংসদে অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি

সংসদ রিপোর্টার

১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, সোমবার, ১০:১৭ পূর্বাহ্ন

পুঁজিবাজারে স্মরণকালের ভয়াবহ বিপর্যয় এবং ব্যাংক ও আর্থিকখাতের বিপর্যয়ে জাতীয় সংসদে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির দু’জন সিনিয়র সংসদ সদস্য। দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ স্টক এক্সচেঞ্জে ষড়যন্ত্র বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। অন্যদিকে দলটির সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ব্যাংক ও আর্থিক খাতে বিপর্যয়ের  জন্য ডিসেম্বর নয়, এখনই অর্থমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে তারা এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ফ্লোর নিয়ে কাজী ফিরোজ রশীদ পুঁজিবাজারে ভয়াবহ ধসে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, শেয়ার বাজারে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় ঘটে গেছে। সূচক নেমে গেছে তলানিতে। প্রতিটি শেয়ার নিম্নমুখী। কী দুর্ভাগ্য এই মুহূর্তে স্টক এক্সচেঞ্জ নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই মুহূর্তে কোনো কোম্পানি যদি ২৫ শতাংশ শেয়ার তুলে নেয় তাহলে মহাবিপর্যয় নেমে আসবে। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনি সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে নির্দেশ দিন, যেন এভাবে শেয়ার বিক্রি করতে না পারে। এটা হলে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়ে যাবে। অন্যদিকে পয়েন্ট অব অর্ডারে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ফ্লোর নিয়ে বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক খাত ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। লুটপাটের মাধ্যমে টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। আজ অর্থনীতির রক্তক্ষরণ হচ্ছে। অর্থনীতির রক্তক্ষরণের কারণে জাতির রক্তক্ষরণ হচ্ছে। পানামা পেপার্স, প্যারাডাইস পেপার্স কেলেঙ্কারির মাধ্যমে অর্থনীতিকে দুর্বল করা হচ্ছে। তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন ডিসেম্বরে অবসরে যাবেন। ডিসেম্বর পর্যন্ত কেন রক্তক্ষরণ কন্টিনিউ করবেন? আজকে এখনই পদত্যাগ করুন। মানুষকে বাঁচান, দেশ ও জাতিকে বাঁচান। ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করার দরকার কী? আপনি আজকে এখনই অবসরে চলে যান। গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বাঁচান, আমাদের সবাইকে বাঁচান।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যারা টাকা পাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। প্যারাডাইস পেপার্স ও পানামা পেপার্সে যাদের নাম এসেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে জাতি আপনাকে সাধুবাদ জানাবে। সমপ্রতি অর্থমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেছেন অর্থনীতির যে অবস্থা, সরকারি ব্যাংকের যে অবস্থা এর জন্য নাকি সরকার দায়ী? সরকার দায়ী মানে কী সরকার প্রধান দায়ী? সরকার প্রধানতো অর্থমন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রণালয়ে। তাই সেই দায়িত্ব আপনাকেই নিতে হবে। অর্থ পাচারের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা চলে গেল। পানামা পেপার্সে অনেকের নাম আসলো কিন্তু কোনো ব্যবস্থা সরকার বা অর্থমন্ত্রী নিলেন না। জিয়াউদ্দিন বাবলু এ সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের উদাহরণ দিয়ে বলেন, পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারির ভিত্তিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। অথচ আমাদের দেশের ২৭ জনের নাম আসছে কিন্তু কারো বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কত হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে তার কোনো  হিসাব দেননি। জনতা ব্যাংক কেলেঙ্কারি নিয়ে তিনি বলেন, অর্থমন্ত্রী বলেন এরজন্য ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বারকাত দায়ী। কে দায়ী আমাদের জানার দরকার নেই, আপনি কী ব্যবস্থা নিয়েছেন? সবগুলো ব্যাংকে এখন রক্তক্ষরণ হচ্ছে। কথা আছে- যার হয় যক্ষা, তার নাই রক্ষা। অর্থনীতির যক্ষা হয়েছে এর থেকে কোনো রক্ষা নেই।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status