ভারত
ঋণের ফাঁসে জড়িয়ে পড়ছে মমতার সরকার
কলকাতা প্রতিনিধি
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শনিবার, ৬:৫৩ পূর্বাহ্ন
সরকার চালাতে গিয়ে ক্রমশ ঋণের ফাঁসে জড়িয়ে পড়ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আবার বাজার থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে সরকারকে। নবান্ন সুত্রের খবর, মার্চের আগেই বাজার থেকে ফের ২ হাজার কোটি রুপি ঋণ নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। ফলে বর্তমান অর্থ বছরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঋণের পরিমান বেড়ে দাঁড়াবে সাড়ে তিন লক্ষ ৬৬ হাজার কোটি রুপিতে। অথচ ২০১৩-১৪ সালে রাজ্য সরকারের ঋণের পরিমান ছিল ২ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি রুপি। তবে বামফ্রন্ট সরকার রেখে গিয়েছিল ১ লক্ষ ৯৩ হাজার কোটি রুপির ঋণের বোঝা। অর্থনীতিবিদদের আশঙ্কা, এই ভাবে ক্রমাগত বাজার থেকে ঋণ নেবার ফলে সরকার অচলাবস্থার দিকে চলে যাবে। পশ্চিমবঙ্গের মুখমন্ত্রী অবশ্য অভিযোগ করেছেন যে, পূর্বতন বামফ্রন্ট সরকার বিশাল ঋণের বোঝা এই সরকারের উপর চাপিয়ে দিয়ে গিয়েছে। তাঁর মতে, বামফ্রন্ট সরকারের আমলের ঋণের জেরে সুদ মেটাতে গিয়ে রাজ্যকে বছরের পর বছর নতুন করে ঋনের ফাঁসে জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরও সরকার খরচের রাশ না টেনে আরও বেলাগাম হয়ে ওঠাতেই ঋণের পরিমান বাড়ছে বলে অভিযোগ। নবান্ন সুত্রে জানা গেছে, ২০১২-১৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ২০ হাজার ৫০০ কোটি রুপি। ২০১৩-১৪ সালে বাজার থেকে নেওযা ঋণের পরিমাণ ছিল ২১ হাজার কোটি রুপি। ২০১৬-১৭ সালে সেই পরিমাণ ছিল ৩২ হাজার কোটি রুপি। এই আর্থিক বছরে তা ৩২ হাজার কোটি রুপিকেও ছাড়িয়ে যাবে বলে অনুমান। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি অবশ্য ঋণের পরিমান ক্রমাগত বৃদ্ধির জন্য সরকারকেই দায়ী করছেন। তাঁদের অভিযোগ, নিজের খুশি মত অনুৎপাদক খাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্রায় অর্থ বিলি করে চলেছেন। এক একটি গালভরা প্রকল্পের নাম দিয়ে অর্থ বিলি যেমন চলছে তেমনি মেলা ও উৎসবের নামেও চলছে অর্থে মোহচ্ছব। এই বছরেই রাজ্যের বিভিন্ন ক্লাবগুলিকে নির্বাচনের আগে ব্যবহার করার উদ্দেশ্যে ১৫০০ কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ করেছেন। বিরোধীদের বক্তব্য, বেহিজসেবী খরচের মাধ্যমে মমতা রাজ্যটিকে ঋণের পাহাড়ের উপর বসিয়ে দিযেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য থেকে কর বাবদ সংগ্রহীত অর্থ পেলেও উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করছে না। আর তাই বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প ও কর্মচারীদের বেতন দিতে বাধ্য হয়েই সরকারকে ফের বাজার থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, ঋণের সুদ মেটাতেও রাজস্ব আয়ের একটা বড় অংশ ব্যয় হচ্ছে।