দেশ বিদেশ

প্রস্তাবিত বাংলাদেশ থেরাপি এবং রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল

আইন-২০১৭ নিয়ে ফিজিক্যাল মেডিসিন চিকিৎসকদের আপত্তি

স্টাফ রিপোর্টার

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার, ৯:১৬ পূর্বাহ্ন

অবিলম্বে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারাধীন ‘প্রস্তাবিত বাংলাদেশ থেরাপি এবং রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন, ২০১৭’ প্রণয়ন প্রক্রিয়া স্থগিত করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটিশন-এর নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, চিকিৎসাসেবা সহায়ক বিভিন্ন পেশাজীবীদের রেগুলেশনের জন্য বিদ্যমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও পূর্ববর্তী আইনসমূহের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারাধীন ‘বাংলাদেশ এলাইড হেলথ কাউন্সিল’ গঠন করা হোক। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সি-ব্লকের নিচে ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসক নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দেশে এই ধরনের আইন হলে বড় ধরনের সমস্যা হবে। বিভ্রান্তিকর আইন করা হলে স্বাস্থ্যখাত মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়বে। প্রতিবন্ধীদের জন্য নীতি কৌশল কি হবে সে সংক্রান্ত আইন করতে পারে সরকার। তাদের জন্য সমন্বিত কাউন্সিল দরকার আছে। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, রুলস অব বিজনেস-এর ধারা ২২(বি)(৮) অনুযায়ী চিকিৎসক ও চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট যে কোনো কাউন্সিল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত। প্রস্তাবিত খসড়া আইনে স্বাস্থ্য সহায়ক পেশাজীবীদের যেভাবে শ্রেণিবিভাগ করা হয়েছে তা বিদ্যামান স্বাস্থ্য কাঠামো এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে স্বীকৃত নয় বলে সাধারণ সম্পাদক উল্লেখ করেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল’ দেশে চিকিৎসা সেবা ও স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের নিয়ন্ত্রণকারী একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রস্তাবিত আরেকটি অনুরূপ আইন ‘বাংলাদেশ থেরাপি এবং রিহ্যাবিলিটেশন কাউন্সিল আইন, ২০১৭’ বিদ্যমান আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে। বিএমডিসি অ্যাক্ট ২০১০-এর ২২ ও ২৮ ধারা মতে উক্ত সংস্থার নিবন্ধন ব্যতীত অন্য কেউ নিজেকে চিকিৎসক বলে পরিচয় প্রদান করতে পারবে না। কোনো ধরনের ওষুধ বা ব্যবস্থাপত্র প্রদান করতে পারবে না। প্রস্তাবিত আইনের প্রথম তফসিলের (ক) এ ফিজিওথেরাপিস্টদের চিকিৎসক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা বিদ্যমান আইনের পরিপন্থি। এতে অপচিকিৎসার বিস্তৃতি ঘটবে ও জনস্বাস্থ্য হুমকির সম্মুখীন হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়। ডা. মো. শাহাদাত হোসেন আরো বলেন, প্রস্তাবিত কাউন্সিলের ধারা ২২- এ থেরাপি এবং রিহ্যাবিলিটেশন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক, সেন্টার ইত্যাদির অনুমোদন দেয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দিয়ে থাকে। এটি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বা তৎকর্তৃক গঠিত কোনো কাউন্সিল দিতে পারে না। স্বাস্থ্য সহায়ক পেশাজীবীদের নিবন্ধন, স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি এবং স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান (হাসপাতাল, ক্লিনিক, সেন্টার) ইত্যাদির অনুমোদন এই তিনটি স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিষয় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রণীত হলে স্বাস্থ্য খাতে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হবে এবং বিদ্যমান বিভিন্ন আইনের পরিপন্থি হবে বলে উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন, প্রস্তাবিত আইনটি অটিজম ও স্নায়ু বিকাশজনিত সমস্যা বিষয়ক জাতীয় স্ট্রিয়ারি কমিটির সভায় সবার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উত্থাপিত হলেও এই আইনটির সঙ্গে উক্ত বিষয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আইনটি সম্পূর্ণরূপে স্বাস্থ্যসেবা, স্বাস্থ্য সহায়ক পেশাজীবী ও স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ডা. শামসুন নাহার, অধ্যাপক ডা. মো. মনিরুজ্জামান খান, সহকারী অধ্যাপক ডা. মশিউর রহমান খসরু প্রমুখ।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status