এক্সক্লুসিভ

সুসমপর্ক বজায় রাখুন পরিবারের সঙ্গে

তারুণ্য ডেস্ক

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার, ৮:৩৩ পূর্বাহ্ন

আমরা সবাই নিজ নিজ পরিবারকে ভালোবাসি। সন্তানের সঙ্গে বাবা-মা’র নিঃস্বার্থ সমপর্কের মতো নির্মল সমপর্ক আর দ্বিতীয়টি নেই। তবে এই নিবিড় সমপর্কেও মাঝে মাঝে ঝাঁকুনি লাগে। ধরে চিড়। বিশেষ করে সন্তানদের তরুণ বয়সে বাবা-মা’র সঙ্গে চিন্তা-ভাবনার পার্থক্যের কারণে এক ধরনের টানাপড়েন তৈরি হয়। সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও অনেক ক্ষেত্রে পরিবার তাকে সেই ছোট্ট বেলার বাচ্চাটির মতোই বিবেচনা করে। তবে বাস্তবতা হলো সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক হলে তার সঙ্গে পরিবারের আচরণের কিছু পরিবর্তন আবশ্যক হয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে সচেতন মা-বাবা নিজেরাই সময়ের দাবি মেনে প্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের সঙ্গে আচরণের ধরন পরিবর্তন করে নেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এমনটি নাও ঘটতে পারে। সেক্ষেত্রে সন্তান নিজে উদ্যোগী হয়ে কিছু নির্দিষ্ট পন্থা অবলম্বন করে পরিবারের সঙ্গে সমপর্কে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনতে উদ্যোগী হতে পারেন। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত রিডার্স ডাইজেস্টের কিছু নির্দেশনা উল্লেখ করা হলো-
১. পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে পরিণত আচরণ করুন।
২. তাদের সঙ্গে বন্ধুসুলভ সমপর্ক গড়ে তুলুন। বন্ধুত্বপূর্ণ কথাবার্তা বলুন।
৩. পরিবারের কোনো কিছুতে দ্বিমত থাকলে এবং সেটা তাৎপর্যপূর্ণ হলে এ ব্যাপারে পরিবারের সঙ্গে সরাসরি কথা বলুন। তবে নিজের অমত জানাতে গিয়ে রূঢ় আচরণ করবেন না। হাসিমুখে স্বাভাবিকভাবে মতানৈক্য জানান দিন।
৪. যেকোনো ছোটখাটো বিষয়ে বার বার পরিবারের উপদেশ খুঁজবেন না। সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বনির্ভরতা আপনার পরিণত হয়ে ওঠার কথা জানান দেবে। তার মানে কিন্তু এই না যে, পরিবারের পরামর্শের থোড়াই কেয়ার করবেন। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরিবারের অভিজ্ঞ সদস্যদের মতামত এবং পরামর্শ অমূল্য। কারণ পরিবারের চেয়ে নিঃস্বার্থ আর কে থাকে মানুষের? দিনশেষে আপনার মঙ্গল সবচেয়ে বেশি চায় আপনার পরিবার।
৫. নিজের যেকোনো সমস্যার ভার পরিবারের কাঁধে তুলে দেবেন না। ভার বইতে শিখুন। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরে সন্তানের উচিত মা-বাবা’র ওপর থেকে আর্থিক নির্ভরতা যতটা সম্ভব কমিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা।
৬. পরিবারের সঙ্গে স্মৃতিচারণের অভ্যাস গড়ে তোলা ভালো। বিশেষ করে, বাবা-মা বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদের সঙ্গে পুরনো দিনের স্মৃতি, আবেগ নিয়ে কথা বলুন। এটি আপনার গড়ে ওঠা দায়িত্বশীলতার কথা জানান দেবে।
৭. পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। হতে পারে আপনার বাবা একটু বদরাগী। মা একটু বেশিই অভিমানী। হয়তো কখনো কখনো অল্পতেই বেশি প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ফেলেন। কিন্তু ভুলে যাবেন না, তারাই আপনার বিপদে, কষ্টে সবচেয়ে নিঃস্বার্থভাবে এগিয়ে আসেন, আসবেন। তাই যতটা সম্ভব শ্রদ্ধাশীল আচরণ করুন। কৃতজ্ঞ থাকুন।
৮. নিজের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে সপষ্ট হন। অনেক সময় এমন হতেই পারে যেকোনো একটা বিষয় নিয়ে আপনার সঙ্গে পরিবারের মতের মিল হচ্ছে না। ধরুন, ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে হয়তো পরিবার চাইছে আপনি ব্যাংকে চাকরি করুন, আপনি চাইছেন প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হতে। এক্ষেত্রে বাহুল্য ত্যাগ করে পরিবারকে নিজের চাওয়া সমপর্কে বুঝিয়ে বলুন। তাদেরকে বোঝান যে, দিনশেষে কাজ করবেন আপনি। সন্তুষ্টি থাকতে হবে আপনারও।
৯. নিজেদের ভেতর পছন্দের মিল খুঁজে বের করুন। চেষ্টা করুন সেসব কর্মকাণ্ডে একসঙ্গে অংশগ্রহণ করার। ধরুন, আপনার মা কবিতা ভালোবাসেন। কোনো কবিতা উৎসবে মাকে নিয়ে একসঙ্গে ঘুরে আসুন। বাবা ফুটবল খেলা পছন্দ করেন? প্রিয় দলের খেলাটা একসঙ্গে বসেই উপভোগ করলে মন্দ কি?
দিনশেষে পরিবারের চেয়ে আপন মানুষের কেউ হয় না। এই অমূল্য বন্ধনকে নিবিড় রাখতে একটু প্রচেষ্টা, একটু আত্মত্যাগের ধৈর্য আপনার পারিবারিক জীবনকে করে তুলতে পারে আরো মধুময়।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status