এক্সক্লুসিভ

সা ক্ষা ৎ কা র

একুশের অপসংস্কৃতি রোধে তারুণ্য

নাজমুস সাদাত পারভেজ

১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার, ৮:৩৩ পূর্বাহ্ন

একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল একটি দিন। এটি বাঙালি জনগণের ভাষা আন্দোলনে একদিকে মর্মান্তিক অন্যদিকে গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতিবিজড়িত দিন। ১৯৫২ সালের এ দিনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের ওপর পুলিশের গুলিবর্ষণে শহীদ হন সালাম, জব্বার, বরকতসহ কয়েক তরুণ। এই যে আমাদের অগ্রজদের ভাষার জন্য রক্তভেজা ভালোবাসা, সেই ভালোবাসার ভাষাকে আসলে কতটুকু মূল্যায়ন করছি আমরা? ভাষার অপসংস্কৃতি রোধে বর্তমান তারুণ্য কতটুকু সচেতন? এ নিয়ে মানবজমিনের সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক এবং সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম ফজলুল হক।
জানতে চাওয়া হয়, একুশে ফেব্রুয়ারিতে দেখা যায় পাড়া-মহল্লায় হিন্দি গান বাজছে। একুশের দিনটিতেও এমন কার্যকলাপ কি অপসংস্কৃতির আগ্রাসন নয়? আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, এখানে ভ্রান্তি আছে। জাতিকে দেখবার ক্ষেত্রে ভ্রান্তি আছে। নানা কারণে ঐতিহাসিকভাবে এই ভ্রান্তিটা দেখা দিয়েছে। যদি আমরা বাংলা ভাষা, বাংলা সাহিত্য, বাঙালির সংস্কৃতির চর্চা জাতীয় জীবনে ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, তাহলে এসব সমস্যা থাকবে না। আমাদের মনোযোগ দেয়া উচিত কী করে আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি, জাতীয় ভাষা, আমাদের রাষ্ট্র ও সাহিত্যকে উন্নত করবো। ভালো বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়ে সামনে আনা দরকার। এই কাজটা করতে পারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা একাডেমি, এশিয়াটিক সোসাইটি, বিআইবিএস- এ রকম আরও প্রতিষ্ঠান। কিন্তু এরা এটা করছে না। দ্বিতীয়ত, প্রচারমাধ্যম এ ব্যাপারে ভালো ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্তু আমাদের প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া সমপূর্ণ কমার্শিয়াল দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে চলছে। শুধু বাণিজ্যিক প্রয়োজন প্রাধান্য পাচ্ছে। আরও বাড়বে যদি ভালো জিনিসগুলো ভালোভাবে সামনে না রাখা হয়। ইদানীং কথ্যভাষায় তরুণদের মধ্যে একধরনের বিকৃতি সম্পর্কে আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, এটাও একটা ভুল দৃষ্টিভঙ্গিজাত। আমাদের জাতীয়জীবনে যারা সামনের সারির লেখক বলে পরিচিত, তারা তাদের লেখার মাধ্যমে তরুণদের সামনে উন্নত চেতনা আনতে পারছেন না। কেউ কেউ আনছেন, কিন্তু সেগুলো আমাদের প্রচারমাধ্যম গুরুত্ব দিচ্ছে না। ভালো জিনিসটাকে বাংলা একাডেমি অথবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যথোচিত গুরুত্ব দিচ্ছে না। তার ফলে তরুণদের মধ্যে একটা ভুল জীবনজগত দৃষ্টি জায়গা পেয়েছে। যারা বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, বিশিষ্ট নাগরিক বলে পরিচিত, তাদের ভূমিকা তো ভালো না। বুদ্ধিজীবীদের প্রতি আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত খারাপ। যারা সুশীলসমাজ সংগঠন করেন, তাদের প্রতি তরুণদেরও কোনো শ্রদ্ধা নেই। তারাও তরুণদের ব্যাপারে খুব বেশি আগ্রহী মনে হয় না। তিনি বলেন, সামগ্রিক সমন্বয়ের মাধ্যমেই ভাষায় অপসংস্কৃতি প্রভাব রোধ করা সম্ভব হবে।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status