বিনোদন

ভালোবাসা দিবস স্পেশাল

ভালোবাসার রকমফের

পিয়াস সরকার

১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, বুধবার, ৮:৪৪ পূর্বাহ্ন

বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আজ। বর্ণিল নানা আয়োজনে প্রতি বছর পালন করা হয়ে থাকে এ দিনটি। ভালোবাসা দিবস বিশ্বজুড়ে অনেক আগে থেকে পালিত হলেও, বাংলাদেশে তা পালিত হচ্ছে ১৯৯৩ সাল থেকে। যুগের পালাবদলের সঙ্গে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিশীলন হয়ে আসছে ভালোবাসার উদযাপনের ধরন। হাতের নাগালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। অল্প খরচে যে কোনো ব্যক্তি চাইলেই যুক্ত হতে পারছেন এসব মাধ্যমে। বিশেষ করে ফেসবুকের মাধ্যমে অতি সহজেই যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে একে অন্যের সঙ্গে। আর এর মাধ্যমে সম্পর্কও ডানা মেলে নানাভাবে। এ প্রসঙ্গে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভর্সিটির শিক্ষার্থী নিলা প্রামাণিক বলেন, সজল নামটি আমার খুব পছন্দের। ফেসবুকে হঠাৎ একদিন সজল নামের আইডি থেকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসে। আমি সাধারণত অচেনাদের সঙ্গে ফেসবুকে যুক্ত হই না। তবে নামের কারণে তার সঙ্গে যুক্ত হওয়া। কথা বলতে বলতে আমাদের সম্পর্কটা কখন যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ায় বুঝতেই পারিনি। এখন আমাদের সম্পর্কের বয়স তিন বছর। এদিকে শিক্ষার্থী শাফিন ইসলাম বলেন, আমার একাধিক মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ আছে। হ্যাঁ, এগুলোর মধ্যে ফেইক আইডিও থাকতে পারে। আমি কোনোদিন তাদের সঙ্গে দেখা করি নাই বা করার ইচ্ছাও নাই। আমার উদ্দেশ্য শুধুই টাইম পাস করা। বর্তমান সময়ে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া যেন অতি সাধারণ একটি ঘটনা। ভালোবাসার সম্পর্কে জড়ানোর জন্য যোগ্যতার প্রয়োজন আছে? এই প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থী রাখি দেবনাথ জানান, জীবনটা অবশ্যই বাংলা চলচিত্রের গল্পের মতো নয় যে, আমি আমার থেকে অনেক কম যোগ্যতার একটি ছেলের সঙ্গে প্রেম করব। প্রেমটা অবশ্যই হওয়া উচিত সমপর্যায়ে বা একটু কমবেশি হতেই পারে। যাতে আমি আমার পরিবারকে তার কথা বলতে পারি। তার প্রেমিক জিতেন রায় একই প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, ভালোবাসার সম্পর্কের জন্য সামাজিক মর্যাদাটা অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ। আমি চাইলেও আমার সামাজিকতার বাইরে যেতে পারি না। হতে পারে সেটা। তবে তা ভালোবাসা না ভালোলাগা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ফটোগ্রাফার জানান, তার প্রেমিকা পড়তেন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সবকিছু ভালোভাবেই চলছিল কিন্তু হঠাৎ লক্ষ্য করতে থাকেন তার প্রেমিকার আচরণে পরিবর্তন আসছে। প্রথমে কারণ বলতে না চাইলেও অনেক দিন পর তার প্রেমিকা জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল এক ছেলের সঙ্গে। দেখাও করতেন প্রায়ই। এমন চলা অবস্থায় মনের অজান্তেই শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। কান্না জড়িত কণ্ঠে সে বলে, আমি তোমাকে অনেক ঠকিয়েছি, আর ঠকাতে চাই না। আমাকে ভুলে যেও আর পারলে মাফ করে দিও। তখন আমি বলেছিলাম, আমি তোমাকে মাফ করে দিতে রাজি আছি কিন্তু ভুলে যেতে পারবো না। সেই দিন সে আমাকে কথা দিয়েছিল আর আমাকে ঠকাবে না। আমি তাকে বিশ্বাস করেছি এবং সে আমার বিশ্বাসের মর্যাদা রেখেছে। এখন আমরা সুখে শান্তিতে ঘর করছি। আমাদের ঘরে জন্ম নিয়েছে পুতুলের মতো ফুটফুটে একটি কন্যাসন্তান। প্রায়ই গণমাধ্যমে উঠে আসছে বাংলাদেশি প্রেমিকের টানে ছুটে আসছেন সুদূর প্রবাস থেকে প্রেমিকারা। ভালোবাসার টানে ঘর, আপনজন, পরিবেশ, সমাজ ছেড়ে আসা এসব মানুষ ঘর বাঁধছেন হাজার হাজার মাইল দূরে। অধিকাংশই আবার বধূ হচ্ছেন নিভৃত গ্রামে, দরিদ্র পরিবারে। পরিবারের অমতে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বী অখিল চন্দ্র ও মুসলিম মেয়ে রেশমা খাতুন। বিবাহ করার কারণে দুই পরিবার খুব স্বাভাবিক কারণেই অখুশি ছিলেন। এমনকি সন্তান জন্ম নেয়ার পরেও দেখতে আসেনি তার পরিবার। ১৩ বছর সংসার করার পর হঠাৎ মৃত্যু ঘটে রেশমা খাতুনের। সমাহিত করা হয়েছে কবরে এবং মুসলমান ধর্মের সকল রীতিনীতি মেনেই। একমাত্র মেয়ের বিদায়ে উপস্থিত ছিলেন তার বাবা-মা। হয়তো সে এই ভেবেই পরপারে সুখী আছে যে শেষ পর্যন্ত তার জন্মদাতা মা-বাবা ক্ষমা করে দিয়েছেন। আমি আজ প্রায় সাত বছর হলো তাকে ছাড়া বসবাস করছি। বাকিটা জীবন তার স্মৃতি নিয়েই কেটে দিতে চাই। বলতে বলতে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন অখিল। বিশেষ দিন উপলক্ষে সাধারণত বর্ণিল আয়োজন থাকে সবখানে। ভালোবাসা দিবসকে কাজে লাগিয়েও কিছু ব্যবসা গড়ে ওঠে। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে একই কাপড় দিয়ে নিজের জন্য থ্রিপিস ও তার প্রেমিকের জন্য ফতুয়া বানাতে দিয়েছেন অতসি বসুনীয়া। তিনি বলেন, যদিও আমাদের জন্য প্রতিদিনই ভালোবাসা দিবস। তারপরেও বিশেষ এই দিনটির জন্য আলাদা করে উদযাপনের উদ্দেশ্যে একই কাপড়ে জামা বানানো। এছাড়াও বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দেখা যায় ফুলের দোকান। সেসব দোকানে থাকে নানান ফুলের পসরা। ভালোবাসার প্রতীকী এই দিনে প্রিয়জনকে উপহার দেয়ার প্রথার কারণে আলাদা আয়োজন থাকে দোকানগুলোতে। প্রেমিক যুগলের বড় একটা অংশ আবার একান্ত সময় কাটানোর জন্য জমা হন প্রেক্ষাগৃহে। তাই দর্শক চাহিদার কথা মাথায় রেখে ব্যবস্থা করা হয় বিশেষ চলচিত্রের। টেলিভিশনে থাকে নানা আয়োজন, রেস্টুরেন্টগুলোতে থাকে আলাদা খাবারের ব্যবস্থা। এছাড়াও দোকানগুলোতে রাখা হয় ফানুস, বিশেষ কেক, বিভিন্ন আকৃতির মোমবাতি, শুভেচ্ছা পত্র ইত্যাদি।
   
Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status