শেষের পাতা
গাজীপুরে মুখোমুখি দুই ট্রেন, আহত ৪
স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর থেকে
৪ মে ২০২৪, শনিবারগাজীপুরে তেলবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় দুই চালকসহ আহত হয়েছেন চারজন। শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে জয়দেবপুর স্টেশনের আউটার সিগন্যাল এ নগরের পূর্ব চন্দনা এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে। এতে তেলবাহী ও যাত্রীবাহী ট্রেনের ৯টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে আড়াই ঘণ্টা ধরে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল রুটে ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ থাকে। তবে দুর্ঘটনায় কবলিত যাত্রীবাহী ট্রেনের পেছনের কয়েকটি বগি সরিয়ে ওই রুটের ডাবল লাইনের এক লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয় দুপুর পৌনে ২টা নাগাদ।
এ ঘটনায় রেলওয়ে বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলাদা তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় ও জোনাল অফিসের পক্ষ থেকে আলাদা দুটি কমিটি গঠন করেছে। তারা তিন কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন পেশ করবে। আর জেলা প্রশাসনের তিন সদস্যের গঠিত কমিটির দুই কর্ম দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান গাজীপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবুল ফাতেহ মো. সফিকুল ইসলাম। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, গাজীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মতিউর রহমানকে।
এ ছাড়া রেলওয়ের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক শফিকুর রহমান জানান, রেলওয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কারও অবহেলা কিংবা যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এর সঙ্গে কেউ দায়ী বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসলে সে অনুযায়ী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জয়দেবপুরের স্টেশন মাস্টার হানিফ মিয়া জানান, ঢাকাগামী টাঙ্গাইল কমিউটার ও মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে। তবে টাঙ্গাইল কমিউটারটিতে সাপ্তাহিক বন্ধের কারণে কোনো যাত্রী ছিল না। তেলের ওয়াগানবাহী ট্রেনের পাঁচটি এবং যাত্রীবাহী ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়।
সরজমিন দেখা গেছে, দুর্ঘটনার পর যাত্রীবাহী ট্রেনের কয়েকটি বগি ভেঙে দুমড়ে মুচড়ে গেছে। আর জ্বালানি তেলের ওয়াগন ফেটে গিয়ে কয়েক জায়গায় তেল পড়তে থাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে জ্বালানি তেল পড়তে থাকে। কোনো ধরনের দাহ্য পদার্থ সংযোগের মাধ্যমে যাতে জ্বালানি তেল থেকে কোনো অঘটন না ঘটে সেজন্য র্যাব, বিজেপি, পুলিশ, রেলওয়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দীর্ঘ সময় ধরে তেলের ওয়াগান ঘিরে রাখে। দুর্ঘটনার প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেন এসে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। প্রথমে লাইনে থাকা পেছনের বগিগুলো সরিয়ে নেয়া হয়। পরে লাইনচ্যুত হওয়া বগিগুলোর উদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। এর আগে পর্যন্ত বালতি ও ড্রাম লাগিয়ে কিছু তেল রক্ষার চেষ্টা করা হয়। তবে দুর্ঘটনার দুই ঘণ্টারও বেশি সময় পরে রেলের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছায়।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন জানান, ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত তারা ঘটনাস্থলে এসে দুর্ঘটনায় কবলিত বগিতে তল্লাশি চালিয়ে কাউকে হতাহত অবস্থায় পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় লোকজন এসে আহত ট্রেন চালক ও তাদের সহকারীদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দিন আহম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
ঘনঘন ট্রেন দূর্ঘটনা নিত্য ব্যপারে পরিণত হয়েছে । প্রতিক্ষেত্রেই তদন্ত কমিটি তৈরী হয় । সেই কমিটির সুপারিশ দূর্ঘটনার কারন সহ তা এড়ানো কিভাবে সম্ভব তার জন্যও মতামত দিয়ে থাকেন । তদুপরি দূর্ঘটনা রোধ হচ্ছেনা বরং লোকসানী এ সংস্হার লোকসানই বৃদ্ধি পাচ্ছে ।