ঢাকা, ১৮ মে ২০২৪, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

দেশ বিদেশ

প্রতারিত হয়ে প্রতারকের ভায়রাকে অপহরণ

স্টাফ রিপোর্টার
৪ মে ২০২৪, শনিবার

ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- হাজী ওয়াজী উল্লাহ্‌ খোকন (৬৫), মো. আরিফ হোসেন (৫৫), সাইফ উদ্দিন আহমেদ মিলন (৬২), সিরাতুল মোস্তাকিম (৫৮), মো. রুহুল আমিন (৬০), মো. জাকির হোসেন (৩০) ও মো. স্বাধীন (৫২)। গত বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। র‌্যাব বলছে, গ্রেপ্তারকৃতরা অবৈধ পন্থায় কষ্টিপাথরের মূর্তি ও বিভিন্ন ধাতব মুদ্রা সংগ্রহ করে বিক্রি করে থাকে। এ চক্রের হোতা হাজী ওয়াজী উল্লাহ্‌ খোকন। সম্প্রতি মোস্তফা নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ৯৫ লাখ টাকায় মূর্তি ও ধাতব মুদ্রা কিনে প্রতারিত হন খোকন। যদিও এ কর্মকাণ্ডের পর থেকেই আত্মগোপনে চলে যান মোস্তফা। তার খোঁজে ছিলেন খোকন। কিন্তু তার কোনো হদিস না পেয়ে টাকা আদায় করতে মোস্তফার ভায়রা ভাই আনোয়ার হোসেন খানকে (৪৪) অপহরণ করেন খোকন ও তার চক্রের সদস্যরা। নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার তুষারধারা এলাকা থেকে অস্ত্রের মুখে আনোয়ার হোসেনকে অপহরণ করা হয়।

বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে ওই ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। 

এসময় অপহৃতকে উদ্ধারসহ ১টি রিভালবার, ৮ রাউন্ড গুলি ও শর্টগান জব্দ করা হয়। র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর বলেন, গত পহেলা মে রাত ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার তুষারধারা এলাকায় একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে খোকন হাজীর নেতৃত্বে ৮-৯ জনের একটি অপহরণকারী চক্র আনোয়ারকে তুলে নিয়ে যায়। পরে কেরানীগঞ্জ থানার চুনকুটিয়া এলাকায় খোকন হাজীর মালিকানাধীন চুনকুটিয়া রিয়েল এস্টেট লিমিটেড অফিসে আটকে রাখে। পরবর্তীতে অপহরণকারীরা আনোয়ারের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে পরিবারের কাছে ৯৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আনোয়ারের জীবন বাঁচাতে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা জোগাড় করে অপহরণকারী চক্রের দেয়া একটি ব্যাংক হিসাব নাম্বারে পাঠায়। সাড়ে ১৭ লাখ টাকা পাওয়ার পর আরও টাকার দাবিতে নির্যাতন চালাতে থাকে। এমনকি অপহরণকারীরা টাকা না দিলে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়। এ অভিযোগ পেয়ে র‌্যাব-৩ এর গোয়েন্দা দল দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় অপহরণকারী চক্র ও অপহৃতের অবস্থান শনাক্ত করে। খোকনের অফিসে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের ৭ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক জানান, আসামি খোকন হাজী গত ২০১৫ সাল থেকে মূল্যবান কষ্টিপাথরের মূর্তি ও দুষ্প্রাপ্য পিতলের ধাতব মুদ্রা ভারতে পাচার করে আসছিলেন।

 তার এই অপকর্মের সহযোগী ছিল ভারতীয় এক নাগরিক যার নাম মিলন চক্রবর্তী। যিনি নিজেকে একটি বিখ্যাত ভারতীয় কোম্পানির এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিতেন। কষ্টিপাথরের মূর্তি ও দুষ্প্রাপ্য পিতলের ধাতব মুদ্রার মূল ক্রেতা মিলন চক্রবর্তী। খোকন হাজী ২০১৫-১৭ সালের মধ্যে কষ্টিপাথরের মূর্তি ও ধাতব মুদ্রার ৭টি চালান ভারতে পাচার করেন। খোকন হাজীর কষ্টিপাথরের মূর্তি ও ধাতবমুদ্রা সংগ্রহের কাজে নাঈম (৩৫), মোস্তফা হাওলাদার (৫০) ও রবি নামের কয়েকজন সহযোগী বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করতো। বিনিময়ে তাদের মাসে ৩০ হাজার টাকা করে বেতন দিতো খোকন।

 তিনি জানান, গত ১লা মে মোস্তফা হাওলাদার ও নাঈমের একজন সহযোগী মোবাইল ফোনে খোকন হাজীকে বলেন, মোস্তফা হাওলাদারের ভায়রা-ভাই ভিকটিম আনোয়ার ফতুল্লা থানার তুষারধারা এলাকায় একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। তাকে ধরলে মোস্তফা হাওলাদারের সন্ধান পাওয়া যাবে। এই তথ্য পেয়ে খোকন হাজী তার সহযোগীদের নিয়ে আনোয়ারকে অপহরণের পরিকল্পনা করে।  র‌্যাব-৩ এর সিও আরও জানান, খোকন হাজী একজন ঠিকাদার। মতিঝিল এলাকায় তার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঠিকাদারি ব্যবসার আড়ালে খোকন হাজী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ কষ্টিপাথরের মূর্তি ও দুষ্প্রাপ্য ধাতব মুদ্রার কারবার করে আসছিলেন। এই অপহরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তার সহযোগীরাও অবৈধ কষ্টিপাথর ও ধাতব মুদ্রার কারবারের জড়িত। তিনি বলেন, ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

দেশ বিদেশ থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

দেশ বিদেশ সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status