ঢাকা, ১৮ মে ২০২৪, শনিবার, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিঃ

বাংলারজমিন

দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেয়ায় পিটিআই ইন্সট্রাক্টরের কাণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ থেকে
৪ মে ২০২৪, শনিবার
mzamin

মানিকগঞ্জ পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর বরিউল আওয়ালের কুকীর্তি ফাঁস করে দিলেন স্ত্রী পাপিয়া বেগম। স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি না দেয়া, অন্য নারীর প্রতি আসক্ত, পরকীয়া, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ একমাত্র মেয়ের নিয়মিত ভরণপোষণ না করার অভিযোগ এনে ওই নারী বৃহস্পতিবার মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।  তবে অভিযুক্ত ওই কর্মকতা প্রথমে দ্বিতীয় বিয়ের কথা অস্বীকার করলেও তার স্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথনের একটি অডিও সাংবাদিকদের হাতে আসায় তিনি দ্বিতীয় বিয়ের কথায় গড়িমসি করেন। প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে স্বামীর নির্যাতন ও অপকর্মের ন্যায় বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে পাপিয়া আক্তার বলেন, স্বামীর বেকার অবস্থায় ২০১৭ সালে একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করেন। বিয়ের ১০ মাস পর স্বামীর চাকরি হয় পিটিআই ইন্সট্রাক্টর পদে। এরমধ্যে ২০১৮ সালে তাদের এক কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। স্বামী কর্মস্থল ফেনীতে যোগদান করেন। ২০২০ সালে এক নারী শিক্ষকের সঙ্গে কেলেঙ্কারির ঘটনায় সেখান থেকে তাকে পটিয়াতে বদলি করা হয়। 

তিনি জানান, পটিয়াতে যাওয়ার পর ওই নারী শিক্ষক ফেনীর ফুলগাজী পশ্চিম বসন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাসলিমা আক্তারের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যায়। পরকীয়ার সম্পর্ক জানার পর তাকে সংশোধনের চেষ্টা করলে সে তার ওপর অত্যাচার শুরু করে। এর পর তিনি স্বামীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর বিষয়টি তদন্ত করে ওই নারীর থেকে একটি মুচলেকা নেয়া হয় যাতে আর কোনো সম্পর্কে না জড়ান।

বিজ্ঞাপন
এরপর ২০২৩ সালে জুলাই মাসে তার স্বামীকে মানিকগঞ্জ পিটিআইতে বদলি করা হয়। মানিকগঞ্জ আসার পর তিনি তার ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। এরমধ্যে তার স্বামী তাকে ২০২৩ সালে নভেম্বর মাসে তালাক দেন। এই ঘটনায় তিনি মানিকগঞ্জ সদর থানায় নারী নির্যাতনের একটি অভিযোগ দেন। পরে পুলিশের মধ্যস্থতায় তাদের পুনরায় বিয়ে হয়। কিন্তু পুনরায় বিয়ে হলেও তার স্বামী গোপনে ওই নারীকে নিয়ে ঢাকায় হোটেলে রাত্রীযাপন করেন। তিনি আরও জানান, বিষয়টি জানার পর তার স্বামী ওই নারীকে বিয়ে করবে মর্মে তার কাছে ২০২২ সালের ২০শে আগস্ট তারিখে দ্বিতীয় বিয়ে জন্য স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর চান। তিনি ওই স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর না দেয়ার কারণে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন। পাশাপাশি তার পরিবারের সদস্যদের মোবাইল ফোনে দ্বিতীয় বিয়ে জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। 

ওই নারীকে গোপনে সে বিয়ে করেছে। এখন দ্বিতীয় বিয়ে অনুমতি না দিলে তার চাকরি চলে যাবে। এর জন্য সে ব্যাকডেট দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ের অনুমতি চাচ্ছেন। পাপিয়া আক্তার জানান, স্বামীর দেয়া শর্তে দ্বিতীয় বিয়ে অনুমতি না দেয়াতে গত মাস থেকে একমাত্র কন্যা সন্তানের কোনো ভরণপোষণ দিচ্ছেন না। এমনকি বাবার বাড়িতে যাওয়ার কারণে মানিকগঞ্জের ভাড়াটিয়া বাসায় তালা লাগিয়ে দেন তার স্বামী। পরে তিনি অন্য ভাড়াটিয়ার সাহায্যে ওই বাসার তালা খুলেছেন। তিনি তার স্বামীকে সংশোধন করার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সে সংশোধন হয়নি। সে একজন নারীলোভী নরপশু। পিটিআইতে চাকরি করার কারণে অনেক শিক্ষিকার সঙ্গে তার স্বামীর সম্পর্ক রয়েছে। ফুলগাজী পশ্চিম বসন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের কারণে স্বামী তার গর্ভের সন্তান এবরশন করেছে। এ ব্যাপারে পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর রবিউল আওয়াল বলেন, পাপিয়া আক্তার এখন আমার স্ত্রী নয়। সে অবাধ্য হওয়ার কারণে গত মাসে তাকে তালাক দেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় বিয়ে অনুমতি না দেয়ার কারণে তালাক দিয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন আর দ্বিতীয় বিয়ের প্রয়োজন নেই। পাপিয়া একজন সন্দেহপ্রবণ নারী। সে অফিসে এসে তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে। এধরনের মানুষের সঙ্গে সংসার করা যায় না। তবে তিনি ওই নারীকে বিয়ে করেননি বলে দাবি করেছেন।

পাঠকের মতামত

দ্বিতীয় বিয়েতে স্ত্রীর অনুমতি নেয়া আইনটি কতটুকু সুফল দিচ্ছে - তা গবেষণার বিষয় কিন্তু লুচ্চাদের জন্য পরকীয়ার রাস্তা অবারিত। অবাধ মেলামেশা সমাজকে অতল গহব্বরে নিয়ে যাচ্ছে, এটাই চরম বাস্তবতা।

Ahmad Zafar
৪ মে ২০২৪, শনিবার, ১০:১১ পূর্বাহ্ন

বাংলারজমিন থেকে আরও পড়ুন

আরও খবর

   

বাংলারজমিন সর্বাধিক পঠিত

Logo
প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী
জেনিথ টাওয়ার, ৪০ কাওরান বাজার, ঢাকা-১২১৫ এবং মিডিয়া প্রিন্টার্স ১৪৯-১৫০ তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে
মাহবুবা চৌধুরী কর্তৃক সম্পাদিত ও প্রকাশিত।
ফোন : ৫৫০-১১৭১০-৩ ফ্যাক্স : ৮১২৮৩১৩, ৫৫০১৩৪০০
ই-মেইল: [email protected]
Copyright © 2024
All rights reserved www.mzamin.com
DMCA.com Protection Status